পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ইমরান খানের সরকার মহাবিপদে পড়তে যাচ্ছে। এ বিপদে তার শরিকেরাও তাকে ফেলে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ক্ষমতাসীন জোট থেকে তারা বেরিয়ে গেলে চলতি মাসের শেষের দিকে হতে যাওয়া অনাস্থাভোটে বিরোধী শক্তি আরও জোরদার হবে।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কায়েদ দলের চৌধুরী পারভেজ এলাহি বলেন, ইমরান খান শতভাগ বিপদে। তার জোটের শরিকদের সবাই অন্য দলে ভিড়ছেন।
পারভেজ এলাহি বলেন, ইমরান খান এখন তার মিত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে এবং তার দল ও জোটে থাকার ব্যাপারে বোঝাতে পারে।
যদি ইমরান খান তার জোটের শরিকদের বোঝাতে ও কাছে আনতে ব্যর্থ হন তাহলে অনাস্থাভোটে বিরোধীশক্তি আরও জোরদার হবে।
গত মাসে অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি ও সরকার পরিচালনার অব্যবস্থাপনার অভিযোগে পিটিআইয়ের প্রধান নেতা ও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে বিরোধী দলগুলো।
খোদ ইমরানের দল থেকে সংসদ সদস্যদের একাংশ তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন (পিএমএল-এন) নেতা রানা ইহসান আফজাল খান।
বিরোধী দলের শক্তির ব্যাপারে পারভেজ এলাহি বলেন, পিএমএল-এন, পাকিস্তান পিউপলস পার্টি (পিপিপি) মিলিয়ে ১৬৩টি আসন রয়েছে। এ মাসের দিকে পার্লামেন্টে অনাস্থার পক্ষে বিপক্ষে ভোট হতে পারে। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, ৩৪২ সদস্যবিশিষ্ট নিম্নকক্ষে উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাব পাসের জন্য প্রয়োজন ১৭২ ভোট।
ইমরান খানের মন্ত্রীরা বলছেন, পাকিস্তানের বিরোধী দলের পক্ষে ইমরান খানকে সরাতে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
বিরোধীদের সতর্ক করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ জানিয়েছেন, দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে এর জন্য দায়ী থাকবে তারা। অনাস্থা ভোটে হার বা জিত যাই হোক না কেন এতে ইমরান খানেরই লাভ হবে।
এর আগে ২০২১ সালের মার্চে সিনেট নির্বাচন নিয়ে হতাশা তৈরি হলে সংসদে স্বেচ্ছা অনাস্থা ভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই ভোটে মাত্র ছয় ভোট বেশি পেয়ে টিকে যান ইমরান খান। তিনি তখন ১৭৮ ভোট পেয়েছিলেন।
এদিকে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হলে দেশটির সরকার গঠন কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে কোনো প্রধানমন্ত্রী তার পূর্ণ মেয়াদ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিরোধীদের ক্ষমতায় আসতে হলে দেশটির সেনাবাহিনীর সমর্থনের প্রয়োজন হবে।