দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে প্রথম জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে ঝড় তুলে দলের বড় ইনিংস গড়ার পথে রাখলেন চালকের ভূমিকা। আফগানদের বিপক্ষে প্যাসেঞ্জার সিটে থাকা সাকিব এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে হলেন ম্যাচ সেরা।
সাকিবের হাফ সেঞ্চুরির হাফ সেঞ্চুরির মাইলফলক গড়ার দিনে বাংলাদেশ পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম জয়ের দেখা। টানা ১৯ ম্যাচের হারের পর এল এই জয়। যে জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন কয়েকদিন আগে মানসিক অবসাদে ম্যাচ খেলতে না চাওয়া সাকিব আল হাসান।
সাকিব দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলবেন, নাকি খেলবেন না তা নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি গত কয়দিনে। শেষ পর্যন্ত নানা নাটকের পর সাকিব দলের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা গেলেন। যাওয়ার আগে মানসিক অবসাদ্গ্রস্ত সাকিব বললেন, দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাচারাল বিউটি হয়তো তার অবসাদ দূর করে চাঙ্গা করে তুলবে তাকে।
শুক্রবার ম্যাচের প্রথম বল থেকে ইতিবাচক সাকিব বুঝতেই দিলেন না বিগত দিনে কোনো ঝড় গিয়েছে তার উপর দিয়ে। আজ যে সাকিব ব্যাটেই ঝড় তুললেন। ওয়ান ডাউনে নেমে মেটালেন যথার্থ কান্ডারির ভূমিকা। ৬৪ বলে ৭৭ রানের ইনিংসটি খেলার পথে সাকিবের ব্যাট থেকে এলো ৭ টি চারের পাশাপাশি ৩ টি ছয়ের মারও।
৯৫ রানের ওপেনিং জুটির পর বাংলাদেশ হারালও দ্রুত তিন উইকেট। তাতে হুট করে বাংলাদেশের স্কোরকার্ডে ১২৪ রান তুলতেই নেই ৩ উইকেট। এর আগে এমন অনেক ম্যাচে হুট করে মড়ক লেগে অল্পেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। কিন্তু এদিন সাকিব দারুণ ধৈর্যশীল এক ব্যাটার। প্রথমে থিতু হলেন। তবেই হাত খুললেন। তাতেই ইয়াসির রাব্বির সঙ্গে ১১৫ রানের জুটিতে বাংলাদেশের বড় ইনিংস গড়ার ভিত্তি সাকিবই গড়ে দিলেন। যার উপরে দাঁড়িয়ে রিয়াদ-আফিফ-মিরাজদের ছোট কিন্তু কার্যকরি ইনিংসগুলি টাইগারদের এনে দিয়েছে ম্যামথ স্কোর। এই ম্যাচে সেরা তো সাকিবেরই হওয়ার কথা।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয়ের পর সাকিব আল হাসানের দাপুটে পারফরম্যান্সের দিনে এবার দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেও অধরা জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। ইতিহাস গড়া জয়ে বিদেশের মাটিতে এবার নিয়মিত জয়ের অভ্যাস গড়ে উঠছে টাইগারদের।
নানা বিতর্কে জর্জরিত দল নিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যায়। দলের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসানের খেলা না খেলা নিয়ে বিতর্কে টালমাটাল বাংলাদেশ, মাঠের খেলায় আজ শুরু থেকেই দুর্বার। এ এক অন্য বাংলাদেশ।
ইতিবাচকতাকে সঙ্গী করে ম্যাচে দারুণ সূচনা এনে দিয়েছিল তামিম-লিটন জুটি। যার উপর ভর করে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৩১৪ রানের বিশাল সংগ্রহ।
জবাবে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও ভ্যান ডার ডুসেন ও মিলারের ব্যাটে ম্যাচে টিকে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজ হন্তারকের ভূমিকায় দৃশ্যপটে এলে বাংলাদেশের জয় সুনিশ্চিত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ভ্যান ডুসেন করেন সর্বোচ্চ ৮৬ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৯ রান করেন মিলার।
বাংলাদেশের পক্ষে মেহেদী হাসান মিরাজ নেন ৬১ রানে ৪ উইকেট। তাসকিন আহমেদ নেন ৩ উইকেট। এছাড়া ২টি উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম।