বরিশাল:বরগুনার আমতলীতে রোটা ভাইরাস ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গত সাত দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪৫ জন আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই শিশু। আসন সংকুলান না হওয়ায় রোগীরা বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ দিনে ৪৫ জন রোগী রোটা ভাইরাস ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই শিশু। প্রতিদিন গড়ে ৫-৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১০ জন রোগী। আসন না থাকায় হাসপাতালের বারান্দায় রোগীরা বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সরকারিভাবে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ জন হলেও বেসরকারিভাবে আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক বলে জানা গেছে।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের অধিকাংশ রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না এসে পল্লী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার কম আক্রান্ত রোগী হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

রোগী স্বজনরা অভিযোগ করেন, হাসপাতাল থেকে শুধুই স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আর কোনো ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে না। ফলে বাইরে থেকে তাদের ঔষুধ কিনতে হচ্ছে।

বুধবার আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, ১০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ৭ জন শিশু। আসন না থাকায় রোগীরা বারান্দার ফ্লোরে বিছানা পেতেছেন।

উত্তর চাকামুইয়া গ্রামের কাওসার বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুই দিন আগে ভর্তি হয়েছি। হাসপাতাল থেকে শুধু দুই ব্যাগ স্যালাইন দিয়েছে। এছাড়া সকল ঔষধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।

শিশু হিরামনের মা স্বর্ণা, আবু বকরের মা রাশিদা বেগম, ইকফার বাবা ইলিয়াস ও আলিফের বাবা বেলাল বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের হাসপাতাল থেকে শুধু স্যালাইন ছাড়া আর কিছুই দেওয়া হচ্ছে না।

রোগী ছত্তার প্যাদা বলেন, তিন দিন হয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। স্যালাইন ছাড়া সকল ঔষধ বাইর থেকে কিনতে হচ্ছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. সুমন খন্দকার বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে রোটা ভাইরাস ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। এ ডায়রিয়া সামাল দিতে পর্যান্ত আইভি স্যালাইন রয়েছে। রোগীদের স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এ ডায়রিয়ার আক্রান্ত রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। স্যালাইনেই ভালো হয়ে যায়। তবে কিছু রোগী অ্যান্টিবায়োটিক না দেওয়ার অভিযোগ দিতে পারে।