আয়ারল্যান্ডের আকাশে উড়তে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু-প্রতিরোধী ডুমসডে বিমান। পারমাণবিক যুদ্ধের সময় আকাশেই ঘাঁটি স্থাপনের যোগ্য করে নির্মাণ করা হয়েছে এই বিমান।
বিজনেস ইনসাইডারের খবর বলছে, যদি কখনো পরমাণু যুদ্ধ শুরু হয়, এতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর স্থল-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে দেশটির সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে পরিণত হবে বিমানটি।
অর্থাৎ কেয়ামতের মতো ভয়াবহ বিপর্যয় ও ধ্বংসযজ্ঞ নেমে আসলে বিমানটি কাজে লাগানো হবে বলে এটিকে ডুমসডে বিমান নামে ডাকা হয়।
এটির নাম বোয়িং ৭৪৭ ই-৪বি ‘নাইটওয়াচ’। মূলত পরমাণু বিস্ফোরণ-রোধে ও উড়ন্ত যুদ্ধনিয়ন্ত্রণ কক্ষ হিসেবে ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে বিমানটি নির্মাণ করা হয়েছে। পরমাণু বিস্ফোরণের ইলেকট্রম্যাগনেটিক পালসও প্রতিরোধ করতে পারে ২২ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলারের এই বিমান।
ঠাণ্ডাযুদ্ধের পর থেকে বিশাল বিমানবহরের নেতৃত্ব বজায় রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যুদ্ধ পারমাণবিক হামলায় রূপ নিলে ডুমসডে প্লেনটি উড়ন্ত বিমান ঘাঁটিতে পরিণত হবে।
যে কোনো মুহূর্তে উড্ডয়নের জন্য এ রকম একটি বিমান সর্বদা প্রস্তুত রাখছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। বিশেষজ্ঞরা বিমানটিকে ‘উড়ন্ত পেন্টাগন’ বলে আখ্যায়িত করছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা যে কোনো সময় বিমানটি ব্যবহার করতে পারবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইউরোপ সফরের সময়ে ওয়াশিংটন থেকে বিমানটি উড্ডয়ন করতে দেখেছে আইরিশ মিরর পত্রিকা। চারদিনের সফরে বাইডেন ব্রাসেলস ও বেলজিয়ামে গিয়েছিলেন। তার সফরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বিমানটি আকাশে উড়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে।
তবে জো বাইডেন নিজে এয়ার ফোর্স ওয়ানে ভ্রমণ করেছেন। ফ্লাইট ট্র্যাকিং অ্যাপ ফ্লাইট রাডার ২৪ বলছে, বাইডেনের বহরের অংশ হিসেবে ওয়াশিংটন থেকে বিমানটি উড্ডয়ন করে আটলান্টিকের ওপর দিয়ে উড়ে এসে আয়ারল্যান্ডের নিচ দিয়ে ভ্রমণ করে ইংল্যান্ডের নর্থ ক্যামব্রিজে চক্কর দিয়েছে।
নাইটওয়াচের তিনটি ডেক আছে, ১১২ জনের মতো ক্রু ধারণ করতে পারে। কোনো ধরনের অবতরণ না করেই অন্তত ১২ ঘণ্টা আকাশে উড়তে পারে। কিন্তু বর্তমান সময়ে আকাশেই জ্বালানি ভরার সুযোগ থাকায় বিমানটি বহুদিন একটানা উড়তে পারবে।
এটিতে ১৮টি শয্যা, ছয়টি ওয়াশরুম একটি ব্রিফিং ও একটি সম্মেলন কক্ষ আছে। এছাড়া ওয়ার্ক এরিয়া ও এক্সিকিউটিভ কোয়ার্টারসও রয়েছে। যদিও এয়ার ফোর্স ওয়ানের মতো নাইটওয়াচ বিলাসবহুল না, তবে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের সময় নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় ঈগল-চোখা বিমানটির খ্যাতি আছে।