স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন ছাড়া বাকি আর কারোর অবদান আওয়ামী লীগ স্বীকার করে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
ওবায়দুল কাদেরের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির নেতা কে এটা যদি না জানেন তাহলে তাদের এই মূর্হুতে পদত্যাগ করা উচিত। বিএনপির নেতা দুইজন। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান, তারাই বিএনপির নেতা।
তিনি বলেন, ‘এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট, নতুন কোনো কথা নয়, বিএনপির নেতা এখন যিনি জীবিত আছেন তিনি হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তার অসুস্থতার কারণে তার অবর্তমানে আমাদের নেতা তারেক রহমান। আন্দোলনের নেতাও সেভাবে তারেক রহমানই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি দ্বিধা-বিভক্ত নয়। এখন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আগের চেয়ে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ এবং বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়েই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরে আনবে ..।’
ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতার ভ্রান্ত ইতিহাস প্রচার করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বলা হচ্ছে, একজন ব্যক্তি ও একটি দল ছাড়া কেউই এই স্বাধীনতা যুদ্ধে কৃতিত্ব দাবি করতে পারে না। অথচ সত্য কথা হচ্ছে, স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশের মানুষ সেই ব্রিটিশ আমল থেকে আন্দোলন করেছে, সংগ্রাম করেছে। এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের যে শুরুটা, মুক্তিযুদ্ধে যে সূচনা, সেটা যিনি করেছিলেন তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে, সেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামসহ সকলের নাম মুছে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। তারা একবারও উচ্চারণ করে না শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের কথা, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কথা, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কথা। এমনকি যুদ্ধকালীন তাদের দলের যারা ৯ মাস সরকার পরিচালনা করলো, যুদ্ধ পরিচালনা করলো তাদের কথা একবারও উচ্চারণ করে না। তারা উচ্চারণ করে না তাজউদ্দিন আহমেদ সাহেবের কথা, এম এ জি ওসমানি সাহেবের কথা, সেক্টর কমান্ডার যারা যুদ্ধ করলেন তাদের কথা।’
‘এখন তো তাদের কথা শুনলে মনে হয়, একমাত্র একজন ব্যক্তি এককভাবে এদেশে যুদ্ধ করেছেন, স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন,’ বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির নেতারা নানা ভাগে বিভক্ত। বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। তাদের দলে নেই কোনো গঠণতন্ত্রের বালাই। তারা আজ নানাভাবে বিভক্ত। বিএনপির নেতা কে? তাদের আন্দোলনের নেতা কে?’
ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের এহেন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য তিনি এসব বক্তব্য রাখছেন প্রতিদিন।’