রাজধানীর শাহজাহানপুরে প্রকাশ্যে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান জামান প্রীতিকে গুলি করে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন শুটার মো. মাসুম ওরফে আকাশ। মঙ্গলবার বিকেলে মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে জবানবন্দি দেয় আকাশ।
এর আগে টিপু হত্যা মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড শেষে মাসুমকে আদালতে তোলে গোয়েন্দা পুলিশ। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে মাসুমের জবানবন্দি শোনেন মুখ্য মনগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন। জবানবন্দি রেকর্ডের পর মাসুমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি।
মাসুম আদালতে টিপুকে গুলি করে হত্যার কথা স্বীকার করে জানায় বন্ধু মোল্লা শামীমের মোটরসাইকেলে করে সেদিন ঘটনাস্থলে যান তিনি। টিপুকে গুলি করে শামীমের মোটরসাইকেলে করে এলাকা ছাড়েন শুটার মাসুম।
গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, গুলি করে হত্যার কথা মাসুম স্বীকার করেছে। সেইসঙ্গে পুরো ঘটনাই আদালতে বিচারকের কাছে খুলে বলে সে।
শুটার মাসুম স্বীকার করে বলেছেন, হত্যা মামলাসহ কয়েকটি মামলার আসামি হয়ে তিনি পরিবার থেকে আলাদা ছিলেন। এ নিয়ে হতাশায় ভুগছিলেন তিনি। টিপুকে হত্যা করতে পারলে মামলা থেকে তাকে বাঁচিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল।
হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও মোটরসাইকেল প্রসঙ্গে মাসুম বলেন, ঘটনার তিন দিন আগে কমলাপুরের ইনল্যান্ড ডিপো এলাকায় অপরিচিত এক ব্যক্তি এসে মাসুম ও তার সহযোগীকে একটি মোটরসাইকেল ও অস্ত্র দিয়ে যায়।
ঘটনার আগের দিনও এজিবি কলোনিতে গিয়ে পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় ফিরে আসে মাসুম ও তার সহযোগী। পরে ২৪ মার্চ রাতে কিলিং মিশন শেষ করে একটি নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে সেই অস্ত্র ও মোটরসাইকেল ওই ব্যক্তির কাছে জমা দেন বলেও জানায় সে।
এর আগে গত ২৪ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহজাহানপুরের আমতলা এলাকায় সড়কের ওপর প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু। এছাড়া ঘটনাস্থলে একজন নিরীহ কলেজছাত্রী এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হয়।
পেশাদার কিলার বাহিনী এক থেকে দেড় মিনিটের অপারেশন শেষে পালিয়ে যায়। ১২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে টিপুর দিকে। এর মধ্যে তার শরীরে সাত রাউন্ড গুলি লাগে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলি শাহজাহানপুর থানায় একটি মামলা করেন। পরে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৭ মার্চ বগুড়া থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।