সুপ্রিমকোর্টের আদেশে নতুন পুনর্বহাল হওয়া মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শুক্রবার (৮ এপ্রিল) মন্ত্রিসভার বৈঠকের পাশাপাশি জাতির উদ্দেশ্যে তিনি ভাষণ দেবেন। ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের পার্লামেন্টারি কমিটিরও বৈঠক হবে এদিন।
বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) এক টুইটবার্তায় ইমরান খান বলেন, শেষ বল পর্যন্ত তিনি লড়াই করে যাবেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর তোলা অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছিলেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার। পরে ইমরান খানের পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডা. আরিফ আলভি। কিন্তু বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্ট সেই সিদ্ধান্ত নাকচ কর দিয়ে পার্লামেন্ট পুনবর্হাল করে দিয়েছেন।
এখন শনিবার ইমরান খানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলছে, অনাস্থা ভোট বাতিল করে দেওয়ার ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্ত সংবিধান ও আইনের বিরোধী। তার কোনো আইনগত বৈধতা নেই। যে কারণে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
ক্রিকেট মাঠ থেকে রাজনীতিতে এসে প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইমরান খানকে এখন আইনসভায় আস্থার প্রমাণ দিতে হবে। যদিও সেখানে তার হার আগেই এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে আছে।
৩৪২ আসনের পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে অন্তত ১৭৩ জন সদস্যের সমর্থন পেতে হবে। কিন্তু তার বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব তোলার আগেই ১৭৭ জন সদস্যের সমর্থন জড়ো করে রেখেছে।
সেই লজ্জা এড়াতে পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক গত ৩ এপ্রিল অভাবনীয় এক রাজনৈতিক কৌশলের মঞ্চায়ন ঘটান। যাকে সংবাদ শিরোনামে ক্রিকেট মাঠের গুগলি বলের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডন লিখেছে, রায় ঘোষণার সময় প্রধান বিচারপতি জানান, পাঁচ বিচারকের বেঞ্চ আলোচনা করে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল বলেন, অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব ওঠার পর ২৮ মার্চ অধিবেশন মুলতবি করা হয়েছিল। ডেপুটি স্পিকার ৩ এপ্রিল ওই প্রস্তাব বাতিল করে দেন। তার ওই রুলিং ছিল অসাংবিধানিক।
পাকিস্তানের বিরোধী দলীয় নেতা শাহবাজ শরিফ বলেন, মানুষের প্রত্যাশা পরিপূর্ণভাবে পূরণ করেছেন আদালত। আর এ রায়কে জনগণ ও সংবিধানের বিজয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন পিপিপি নেতা বেলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তিনি বলেন, পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ও সংবিধান নিরাপত্তা পেয়েছে। আল্লাহর ইচ্ছায়, এখন অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সংস্কার করব। এখন থেকে স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।