পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় ঘরের দরজা ভেঙে মারধর, ভাঙচুর, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট ও গাঁজা দিয়ে নাবিন সাজ্জাল (১৭) নামে এক কিশোরকে ফাঁসানোর অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিপ্তরের আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী দ্বিতীয় আমলি আদালতে ওই কিশোরের বাবা আবদুল জলিল ওরফে খোকন সাজ্জাল বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
(মামলা নম্বর-২০১/২০২২)। মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, বরিশাল বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপপরিদর্শক ইশতিয়াক হোসেন, সহকারী উপপরিচালক মো. ফারুক হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক দিপংকর মন্ডল এবং সিপাই ইমাম হোসেন ওরফে শামীম, আবদুল হামিদ, মো. সবুর, খন্দকার জাফর আহম্মেদ ও মো. হেলাল উদ্দিন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. মুজাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদ। আদালতের বিচারক ছিলেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামাল হোসেন।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাউফল উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের কবিরকাঠী গ্রামে গত শনিবার (২ এপ্রিল) ভোরে খোকন সাজ্জালের ছোট ছেলে বাউফল সরকারি কলেজ থেকে ২০২২ সালে এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থী নাবিন সাজ্জাল ঢাকা থেকে এসে বড় ছেলে নাইম সাজ্জালের (২২) সঙ্গে ঘুমাচ্ছিল।
ওই দিন সকাল নয়টার দিকে ১২-১৪ জনের অজ্ঞাত ব্যক্তিদের একটি দল ঘরের পেছনের দুটি দরজা ভেঙে ঢুকে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয়ে নাবিন ও নাইমকে হাতকড়া পরিয়ে মারধর করে।
ওই সময় তারা ঘরের আলমারি ও অন্যান্য আসবাব ভাঙচুর করে এবং আলমারির মধ্যে থাকা ১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ও ৩ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। একপর্যায়ে নাইমকে ছেড়ে দিলেও নাবিনকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যান।
পরে থানায় যোগাযোগ করে জানতে পারেন বরিশাল বিভাগীয় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপপরিদর্শক ইশতিয়াক হোসেন বাদী হয়ে তার ছেলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু করেছেন।
ওই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে নাবিনের শোয়ার ঘরে খাটের নিচ থেকে ৫০০ গ্রাম গাঁজা ও গাঁজা বিক্রির ৭২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। স্বাক্ষী করা হয়েছে মো. সুমন (৩০) ও শ্যামল মিস্ত্রী (৩৫) নামে দুই ব্যক্তিকে।
এ বিষয়ে মামলার ১ নম্বর স্বাক্ষী সুমন বলেন, ‘মারধর ও ভাঙচুরের শব্দ শুনে তিনি ঘটনাস্থলে যান। তার সামনেই নাবিন ও নাঈমকে মারধর করা হয়েছে।
পরে একটি কাগজে তার স্বাক্ষর নেওয়া হয়। তবে ওই ঘর থেকে কোনো গাঁজা উদ্ধার করা হয়নি। আর টাকা উদ্ধার করা হয়েছে আলমারি থেকে।’
২ নম্বর স্বাক্ষী শ্যামল মিস্ত্রীও বলেন,‘গাঁজা ওই ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়নি। টাকা উদ্ধার করা হয়েছে আলমারি থেকে।’
বরিশাল বিভাগীয় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপপরিদর্শক ইশতিয়াক হোসেন তাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।