কপালে টিপ পরা নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় শিক্ষক লতা সমাদ্দারকে হেনস্তা করার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশের তদন্ত কমিটি।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (পেট্রোল-তেজগাঁও) স্নেহাশীষ কুমার দাস সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
স্নেহাশীষ জানান, পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেক যে নিজেই নিয়ম ভেঙেছেন এবং ঘটনা নিয়ে ‘অসত্য তথ্য’ দিয়েছেন, সে বিষয়েও নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা।
গত ২ এপ্রিল সকালে রাজধানীর ফার্মগেটের সেজান পয়েন্টে পুলিশ সদস্য নাজমুল তারেক শিক্ষক লতা সমাদ্দারের কপালের টিপ নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। এর প্রতিবাদ জানালে ‘টিপ পরছিস কেন’ বলে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। পরে হেনস্তার শিকার হওয়ায় একই দিন শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ওই শিক্ষক।
সেই খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এমনকি জাতীয় সংসদেও হেনস্থাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠে।
দুদিন পর কনস্টেবল নাজমুল তারেককে শনাক্ত করার পাশাপাশি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা জানানো হয় পুলিশের তরফ থেকে। সেই সঙ্গে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
পুলিশ জানিয়েছিল, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাজমুল দাবি করেছিলেন, ঘটনার সময় মোটসাইকেলের পেছনে তার অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী বসা ছিলেন। তার গায়ে ধাক্কা লাগায় নাজমুল তর্কে জাড়িয়েছিলেন শিক্ষক লতার সঙ্গে।
পরে পুলিশ জানায়, সিসিটিভি ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ওই সময় মোটরসাইকেলে নাজমুলের সঙ্গে তার স্ত্রী ছিলেন না, ছিল একটি ব্যাগ। তিনি নিজেকে বাঁচাতে বাজারের ব্যাগকে ‘বউ’ বানিয়ে ছিলেন।
ওই দিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে কলেজশিক্ষক লতা সমাদ্দার জানিয়েছিলেন, ‘আমি হেঁটে কলেজের দিকে যাচ্ছিলাম। হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন ‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দিলেন। তাকিয়ে দেখলাম তার গায়ে পুলিশের পোশাক। একটি মোটরবাইকের ওপর বসে আছেন। প্রথম থেকে শুরু করে তিনি যে গালি দিয়েছেন, তা মুখে আনা, এমনকি স্বামীর সঙ্গে বলতে গেলেও লজ্জা লাগবে। ঘুরে ওই ব্যক্তির মোটরবাইকের সামনে গিয়ে দাঁড়াই। তখনও তিনি গালি দিচ্ছেন। লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। একসময় আমার পায়ের পাতার ওপর দিয়েই বাইক চালিয়ে চলে যান।’