বরগুনায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। সদর হাসপাতালে ইতোমধ্যেই ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী ভর্তি রয়েছেন। আর তাদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে আক্রান্তের মধ্যে বেশিরভাগই রয়েছে শিশু।
বরগুনা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (৮ এপ্রিল সকাল ৮টা থেকে ৯ এপ্রিল সকাল ৮টা পর্যন্ত) ২৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৯ জন।
হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ১৩টি শয্যার অনুকূলে বর্তমানে ভর্তি আছে ৪০ জন রোগী। এদিকে মার্চ মাসের থেকে এপ্রিল মাসে ডায়রিয়া আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে অস্বাভাবিক হারে। গত মার্চ মাসে বরগুনা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩১০ জন।
এপ্রিল মাসের গত ৮ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ২৬৪ জন। যার মধ্যে ১১১ জন শিশু।
এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে ছিল ১৩৪ এবং জানুয়ারি মাসে ছিল ১৭৪ জন। অন্যদিকে ২০২১ সালের মার্চ মাসে বরগুনা হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়ে ছিলেন ৯২৮ জন এবং এপ্রিল মাসে ভর্তি হয়েছিল ১ হাজার ৪৩৩ জন।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের নিচতলার (ডায়রিয়া ওয়ার্ডে) মেঝেতে অপরচ্ছিন্ন পরিবেশে গাদাগাদি করে অবস্থান নিতে হয়েছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা।
চিকিৎসকরা বলছেন, সাধারণত এপ্রিল মাসে দেশে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। কিন্তু এ বছর মার্চের শুরুতেই রোগী বাড়তে শুরু করে আশঙ্কাজনক হারে।
এ অবস্থায় রাজধানীসহ সারাদেশে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্বাস্থকর্মীদের।
বরগুনা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (আবাসিক) সোহরাব উদ্দীন জানান, গরমের মৌসুম শুরু হওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালে জনবল কম থাকার কারণে আমরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।
রোগীদের যে পরিমাণে যত্নের প্রয়োজন আমরা শতভাগ না পারলেও সাধ্যমত চেষ্টা চালাচ্ছি। গত মাসের তুলনায় অধিক সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার স্যালাইন ও ওষুধ মজুত রয়েছে।
বরগুনা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ফজলুল হক জানান, রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ডায়রিয়াজনিত রোগ বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। আমরা একে মোকাবিলা করতে চাই।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে। খাবার পানির বিষয়টা তো আমরা দেখি না, এটা স্থানীয় সরকার দেখে। তারা নিশ্চয়ই সেটা দেখছে।
যতক্ষণ পর্যন্ত না শতভাগ বিশুদ্ধ পানি দেওয়া না যাবে, সেটা খাবারের পানি হোক আর নিত্য ব্যবহারের হোক ততক্ষণ পর্যন্ত ডায়রিয়া থেকে আমাদের রেহাই নেই।