রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল না কিনতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি মস্কো ও বেইজিংয়ের সঙ্গে নিরাপত্তা ইস্যুতে নয়াদিল্লিকে সতর্ক থাকার বিষয়ে জোর দিয়েছে ওয়াশিংটন। স্থানীয় সময় সোমবার (১১ এপ্রিল) ভারতের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের ওয়াশিংটন সফরকালে এসব বিষয়ে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী অংশ নেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (১১ এপ্রিল) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ সময় তাদের স্বাগত জানান মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।
পরে পেন্টাগনে দ্বিপাক্ষিক এক বৈঠকে অংশ নেন দুই দেশের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। তাদের আলোচনায় গুরুত্ব পায় রাশিয়া থেকে ভারতের জ্বালানি তেল কেনার বিষয়টি। এ সময় মস্কো থেকে জ্বালানি তেল না কিনতে নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল না কিনতে আমরা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রদের উৎসাহ দিচ্ছি। আমরা জানি সবারই জ্বালানির চাহিদা এবং যোগানের পদ্ধতি আলাদা। তবুও আমরা মস্কো থেকে তেল না কেনার আহ্বান জানাচ্ছি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন আহ্বানের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ভারতের তুলনায় ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়া থেকে বেশি জ্বালানি তেল কেনে। তাই ভারত নয় যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতি মনোযোগ দেওয়া।
এস জয়শঙ্কর আরও বলেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল না কেনার বিষয়ে ভারতের নাম নেওয়া হচ্ছে। অথচ ভারত এক মাসে যেই পরিমাণ তেল কেনে তা ইউরোপ একদিনে ব্যবহার করে। আমি যুক্তরাষ্ট্রকে পরামর্শ দিতে চাই, আপনারা মস্কো থেকে জ্বালানি কেনার বিষয়ে ইউরোপের দেশগুলোর প্রতি নজর দিন।
রাশিয়া-ইউক্রেন ছাড়াও ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ইস্যু নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করেন দুই দেশের মন্ত্রীরা। এ সময় অঞ্চলটিতে চীনের জোরপূর্বক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা চেষ্টার বিষয়ে সতর্ক করেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, চীনের আধিপত্য বিস্তার ঠেকাতে হলে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লির সামরিক বন্ধন আরো শক্তিশালী করতে হবে।
এদিকে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনার আগে ভার্চুয়াল এক বৈঠকে বসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় মোদি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে একাধিকবার দুই দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নয়াদিল্লি আলোচনা চালিয়ে যাবে বলেও বাইডেনকে জানান মোদি।