ইফতার আরবি শব্দ, যা রমজান মাসে রোজাদারদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। রোজা সমাপ্ত করার উদ্দেশ্যে সূর্যাস্তের পর যেকোনো কিছু পানাহার করাকে ইফতার বলে। সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা উত্তম। তারচেয়ে অধিক উত্তম ইফতারের আগে দোয়া করা। কেননা, রোজা সমাপ্তির আগমুহূর্তে ইফতারি সামনে নিয়ে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়।
মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য রোজাদার ব্যক্তি ক্ষুধা-পিপাসায় ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়েও খাবার সামনে রেখে না খেয়ে মহান আল্লাহর দরবারে হাত তোলেন। তাই এ সময়ে দোয়া কবুলের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। কারণ, এ ধরনের দুর্বল ও কষ্টকর অবস্থায় আল্লাহ বান্দার প্রতি সদয় হন।
যথাসময়ে ইফতার করা ও ইফতারের আগে দোয়া করা উত্তম। ইফতারে অহেতুক বিলম্ব করা চরম অনুচিত কাজ। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘মুসলমানরা ততক্ষণ কল্যাণের ওপর থাকবে, যতক্ষণ তারা ইফতার জলদি করবে।’ (বুখারি)
আবু দাউদের বর্ণনায় আছে, ইহুদি-খ্রিস্টানরা দেরি করে ইফতার করে। সুতরাং ইহুদি-খ্রিস্টানদের রোজার সঙ্গে আমাদের রোজার সাদৃশ্য এড়িয়ে চলার জন্য যেভাবে আমাদের অবশ্যই সেহরি খেতে হবে, সেভাবে ইফতারও খেতে হবে দ্রুত।
ইফতার তাড়াতাড়ি করার অর্থ হলো, আমরা খাবারের প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহী ছিলাম, কিন্তু মহান প্রভুর নিষেধের কারণে আমরা তা গ্রহণ করতে পারিনি। এখন তিনি অনুমতি দিয়েছেন, তাই আর কোনো বাধা নেই। অর্থাৎ, ইফতার দ্রুত করার মাধ্যমে দাসত্ব প্রকাশ পায়।
ইফতারের আগের সময়টা স্বাভাবিকভাবেই আমাদের জন্য খুব ব্যস্ত সময়। শত ব্যস্ততার মধ্যেও আমাদের গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ রাখতে হবে–এই সময়টা দোয়া কবুলের সময়। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া নিশ্চয় ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। তাই ইফতারের আগের সময়গুলো অহেতুক গল্পগুজবে নষ্ট না করে, অন্য কোনো কাজে ব্যয় না করে দোয়া, মোনাজাতে লিপ্ত থাকতে সচেষ্ট হোন।
নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, স্বজনদের জন্য, জাতির জন্য, মানবতার জন্য প্রার্থনা করুন। নিজেও দোয়ায় মনোনিবেশ করুন, বাসার সবাইকে উদ্বুদ্ধ করুন মোনাজাতে মনোযোগী হতে।
ইফতারের আগের সময়গুলো মুমিনদের জীবনের জন্য অতি মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ। তাই ইফতারের আগের সময় অন্য কাজে ব্যয় না করে আল্লাহর দরবারে ব্যয় করুন। যেন আপনার নাম, আপনার স্বজনদের নাম মুক্তিপ্রাপ্তদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।