রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনও বিজয়ীর অবস্থানে আছেন বলে মনে করেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির কূটনৈতিক প্রতিবেদক পল অ্যাডামসের প্রতিবেদন এমন তথ্যই দিয়েছে।
পশ্চিমা কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রথম সপ্তাহগুলোতে রাশিয়াকে ঘিরে থাকা সমস্যাগুলো তারা কাটিতে উঠতে পেরেছে বলে আভাস মিলেছে।
ঘটনা হলো, রাশিয়া একগুচ্ছ সরল রেখা ধরে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করেছে। এর অর্থ হচ্ছে, তাদের নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ অনেক ভালো অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমা কর্মকর্তাদের দাবি, একটি একক সড়ক দিয়ে দীর্ঘ সামরিক বহর পরিচালনা করছে রাশিয়া। এতে যে কোনো মুহূর্তে তারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।
বিপরীতে ইউক্রেনের বাহিনী অনেকটা স্মার্ট ও কার্যকরভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বলে মনে করেন তারা। রাশিয়ার কয়েকটি যোগাযোগ লাইন অনেক দীর্ঘ হওয়ায় তা পশ্চিমাদের হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চল থেকে কারখিভ পর্যন্ত যে যোগাযোগ লাইন রয়েছে, সেটি।
পশ্চিমারা বলছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখন জয়ী হওয়ার অবস্থানে রয়েছেন। যদিও যুদ্ধের বিভিন্ন ধরনের ফল আসার শঙ্কা রয়েছে। কিন্তু এসবের কোনোটিই খুব দ্রুত ঘটতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।
ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় দেশগুলো। পশ্চিমারা বলছেন, দোনবাসে রাশিয়ার একটি সফল অভিযানও সম্ভব। অনেক বিরূপ পরিস্থিতিতেও রাশিয়াকে ফের কিয়েভ ও ওডিসার মতো যুদ্ধপূর্ব লক্ষ্যবস্তুর দিকে নিয়ে যেতে পারে।
তারা বলেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর চেয়ে এক থেকে তিনটি সুবিধা বেশি পাচ্ছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। কিন্তু তা নির্ভর করছে, রাশিয়া তাদের সামরিক শক্তিকে কতটা দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করতে পারে এবং কতটা সক্ষমতার সঙ্গে ইউক্রেনের প্রতিরোধ বাহিনীকে তারা মোকাবিলা করে, তার ওপর। এমন একটি পরিস্থিতিতে তাদের দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে, যখন কিয়েভকে পশ্চিমারা আরও বেশি সামরিক সহায়তার হাত বাড়িয়েছে।
মারিউপুলে রাশিয়ার পাঁচ থেকে দশ হাজারের মতো সেনা রয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, দোনবাসে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে দুই ভাগে ভাগ হয়ে দক্ষিণ দিকে প্রত্যাশিত অগ্রযাত্রা হয়নি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাশিয়া যদি মারিউপুলকে অবরুদ্ধ করে রাখতে চায়, তবে সেটা কোনো ছোটখাটো কাজ না। এতে দোনবাসে অংশ নেওয়া বাহিনীগুলোর সক্ষমতা আরও সীমিত করে আনতে হবে তাদের।
যদি দোনবাসের পতন ঘটাতে হয়, তবে মারিউপুলে পুতিনের সিদ্ধান্তে ইউক্রেনে সংঘাতের অন্য মঞ্চগুলোর জন্য কী অর্থ দাঁড়াবে? সামরিক বিশেষজ্ঞ জাস্টিন ক্রাম্প বলেন, আগামী দুই কিংবা তিন সপ্তাহ দোনবাসের যুদ্ধ কোন দিকে যায়, তার ওপরই এই ফল নির্ভর করছে। এই সময়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মধ্যে শান্তি, অস্ত্রবিরতি কিংবা যুদ্ধ আরও প্রলম্বিত হতে পারে।
অর্থাৎ সবকিছু নির্ভর করছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ানরা কতটা শক্তভাবে যুদ্ধ এগিয়ে নিতে পারে, তার ওপর।