দোনবাসের কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দরনগরী মারিউপুল পরিপূর্ণ দখল করে নিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু এমন দাবি করেছেন।-খবর আরটি ও বিবিসির।
যদিও মারিউপুলে রুশ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, এখনো শত শত রুশ যোদ্ধা আজভস্তাইল ইস্পাত কারখানায় লুকিয়ে আছেন। এছাড়া মারিউপুলের সম্পূর্ণ পতন নিয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মস্কো বলছে, বর্তমানে দুই হাজারের বেশি কিয়েভ-অনুগত জঙ্গি কারখানার মধ্যে অবস্থান করছেন। তবে সেখানে আক্রমণ করা উচিত হবে না বলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোইগুকে বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বরং তাদের অবরুদ্ধ করে রাখতে বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি তাদের অস্ত্র সমর্পণেরও প্রস্তাব দিতে বলেছেন।
আজভস্তাইল ইস্পাত কারখানায় সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মার্চের প্রথম দিক থেকে মারিউপুল শহরটি ঘিরে রাখা হয়েছে। আট হাজার ১০০ ইউক্রেনীয় সেনা, বিদেশি ভাড়াটে খুনি, জাতীয়তাবাদী জঙ্গিসহ নতুন-নাৎসি আজভ ব্যাটালিয়নের সেনাদের সেখানে আটকে ছিলেন।
তাদের মধ্যে এক হাজার ৪০০ জাতীয়তাবাদী অস্ত্র সমর্পণ করেছেন। শহরটি থেকে এখন পর্যন্ত এক লাখ ৪২ হাজার বেসামরিক নাগরিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কারখানায় যারা আটকে আছেন, তাদের নিরাপদ প্রস্থান নিশ্চিত করতে রাশিয়া দুবার মানবিক করিডোর খুলতে চাইলেও তা ব্যর্থ হয়েছে। অবশিষ্ট ইউক্রেনীয় সেনাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বলা হয়েছে, যদি তারা আত্মসমর্পণ করেন, তবে নিরাপদে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে। তাদের প্রতি কোনো বৈরী আচরণ করা হবে না।
ইউক্রেনের ৩৬তম মেরিন ব্রিগেডের কমান্ডার সের্গেই ভোলিনাও সেখানে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন। তিনি দাবি করেন, কয়েক শ বেসামরিক নাগরিক সেখানে আছেন। কিন্তু কেন তারা সেখানে স্বেচ্ছায় লুকিয়ে আছেন, সেই ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না এই নৌকর্মকর্তা।
সের্গেই সোইগু বলেন, তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে ৯০টি বাস ও ২৫টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করেছি। কিন্তু কেউই অজভস্তাইল ত্যাগ করছেন না। কেবল শতাধিক বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
এছাড়া মারিউপুল বন্দরে ইউক্রেনীয়দের হাতে থাকা সব জিম্মিদের মুক্ত করে দিয়েছে রাশিয়া। তাদের মধ্যে একটি নৌযানের বেশ কয়েকজন ক্রু রয়েছেন। মাইনের কারণে বন্দরটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, মারিউপুলের অধিকাংশ অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর প্রতিরোধ অব্যাহত রয়েছে।