ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, আগামী বছরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত ইউক্রেন যুদ্ধ অব্যাহত থাকার বাস্তবিক শঙ্কা রয়েছে। তবে ইউক্রেনকে নিষ্পিষ্ট করার চেষ্টায় সফল হবেন না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
শুক্রবার (২২ এপ্রিল) ভারতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এর আগে পশ্চিমা কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ইউক্রেনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জয়ের পথে রয়েছেন। এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, কৌশলগত ভুল থাকা সত্ত্বেও ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ পর্যন্ত যুদ্ধটি চলতে পারে।
বরিস জনসন বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে এটিই বাস্তবিক শঙ্কা। পুতিনের বিপুল সামরিক শক্তি রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে তার রাজনৈতিক অবস্থান কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ তিনি বিপর্যকর ভুল করে বসেছেন। এখন ইউক্রেনকে মর্মান্তিকভাবে নিষ্পেষিত করে দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখার বিকল্পই তার সামনে রয়েছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেনকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন পুতিন। মারিউপুলে একটি স্থলসেতু নিশ্চিত করার পথে রয়েছেন তিনি। তবে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। ইউক্রেনীয়রা তাদের অবিশ্বাস্য বীরত্ব দেখিয়েছেন। তারা লড়াই করতে চান।
বরিস জনসন মনে করেন, ভ্লাদিমির পুতিনের যতই সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব থাকুক না কেন, আগামী অল্প কয়েক মাস তিনি অভিযান অব্যাহত রাখতে পারবেন। আমি একমত যে, এটি দীর্ঘ সময় ধরে হতে পারে। কিন্তু ইউক্রেনের জনগণের সাহসের কাছে তিনি জয়ী হতে পারবেন না।
সংবাদিকতের তিনি আরও বলেন, এটি খুবই লক্ষণীয় বিষয়। বিপরীতে পুতিন নিয়মিতই শক্তিশালী হচ্ছেন, যা ইউক্রেনের জনগণকে প্রতিরোধ করতে হবে।
এদিকে ইউক্রেনের পুরো দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল দখল করতে চায় রাশিয়া। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) দেশটির এক শীর্ষ জেনারেল এমন দাবি করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি আভাস দিয়েছেন, যুদ্ধে নিয়ন্ত্রণ নেওয়া ইউক্রেনের ভূখণ্ডগুলোতে স্থায়ীভাবে দখল প্রতিষ্ঠা করতে চায় রাশিয়া।
প্রতিবেশী দেশের রাজধানী কিয়েভে সামরিক অভিযান থেকে গেল মাসে পিছু হটেছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী। এরপর নতুন অভিযান শুরুর সময় যে লক্ষ্যের কথা জানিয়েছিল তারা, সেখান থেকে আরও সুদূরপ্রসারী ভাবনা নিয়ে রাশিয়া এই যুদ্ধে নেমেছে বলে স্বীকার করেছেন ওই জেনারেল।
রাশিয়ার সেন্ট্রাল মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের উপ-কমান্ডার রুসতাম মিনিকায়েভ বলেন, পুরো পূর্বাঞ্চলীয় দোনবাস অঞ্চল দখল করতে চায় রাশিয়া। এরপর ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে একটি সেতু নির্মাণ করা হবে। কেবল তা-ই না, রাশিয়ার অধিকৃত মলদোভা, দক্ষিণাঞ্চলীয় পুরো বিদ্রোহী অঞ্চলকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে চায় মস্কো।
এর অর্থ দাঁড়াবে, ইউক্রেনের দুই বড় শহর মিকোলাইভ ও ওডিসাকে ছাড়িয়ে তারা আরও কয়েক শ মাইল ভিতরে চলে যেতে চায়। এসব অঞ্চলকে তারা স্থায়ীভাবে রাশিয়ার আয়ত্তে নিয়ে যাবে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেন বলছে, তার মন্তব্যে রাশিয়ার আগের দাবিগুলোকে মিথ্যা প্রমাণিত করেছে। কারণ আগে বলেছিল, ইউক্রেনে তাদের কোনো ভূখণ্ডগত অভিলাষ নেই।