পবিত্র রমজানের তৃতীয় জুমায় আল-আকসা মসজিদে দেড় লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। যদিও মুসল্লিদের ওপর নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইলি বাহিনী। জেরুজালেম ইসলামিক ওয়াকফের বরাতে দোহাভিত্তিক আলজাজিরা এমন খবর দিয়েছে।
অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে শুক্রবারেও (২২ এপ্রিল) ফজরের সময়ে অভিযান চালিয়েছে দখলদাররা। এতে তিন সাংবাদিকসহ ৩১ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এ সময়ে ইসরাইলি পুলিশ লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে দেখা গেছে ফিলিস্তিনিদের।
মুসল্লিদের ওপর রাবার বুলেট, স্টান গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ডোম অব দ্য রকে নামাজরত মুসল্লিরাও আহত হয়েছেন।
ইহুদি পাসওভার উৎসবে গত সপ্তাহে পুলিশ প্রহরায় অবৈধ বসতিস্থাপনকারীরাও মুসল্লিদের ওপর চড়াও হয়েছে। তখন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত নিয়মিত কাণ্ডে পরিণত হয়েছিল। অনেক মুসল্লি গ্রেফতার ও আহত হয়েছেন।
পাসওভারের প্রথম দিন ১৫ এপ্রিল ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ১৫৮ ফিলিস্তিনি আহত হন। আর মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৪০০ জনকে। উত্তেজনা বৃদ্ধি ও হামলার শঙ্কা থাকলেও ফিলিস্তিনিরা আল-আকসায় আসা বন্ধ রাখেননি।
ফিলিস্তিনিরা বলেন, আল-আকসায় তাদের উপস্থিতি অপরিহার্য। তারা সেখানে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন না। মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে রানা মোহাম্মদ নামের এক যুবক বলেন, লোকজনের আল-আকসায় ও জেরুজালেমে আসা গুরুত্বপূর্ণ। এতে জেরুজালেমের প্রতি অধিকার ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত হবে।
তিনি আরও বলেন, এর মধ্য দিয়ে শিশুদের এই শিক্ষা দেওয়া হবে যে এই ভূখণ্ড আমাদের। আল-আকসা আমাদের ধর্ম।
রমজানের বাইরে অধিকৃত পশ্চিমতীরের কেউ আল-আকসায় প্রবেশ করতে চাইলে সামরিক অনুমোদন লাগে। কিন্তু রোজার সময় তারা যখন-তখন সেখানে যেতে পারেন। যদিও ইসরাইলি পাসপোর্ট থাকলে মসজিদে ঢুকতে কোনো সমস্যা হয় না।
রানা মোহাম্মদ বলেন, স্বাভাবিক দিনগুলোতে আমরা আসতে পারি না। কাজেই এই মাসটির জন্য সবসময় অপেক্ষায় থাকি। এখানে থাকার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। অকল্পনীয়। এই মসজিদে ঢুকলে আপনি প্রাণবন্ত হয়ে উঠবেন।
ইহুদিদের পাসওভার উৎসব শেষ হলেও জেরুজালেম ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে উত্তেজনা কমেনি। কিন্তু রমজানের গত ১০ দিনে মসজিদটিতে মুসলমানদের প্রবেশ সীমিত করে দেওয়া হয়েছিল।
গেল তিন সপ্তাহে ফিলিস্তিনিদের হামলায় ১৪ ইসরাইলি নিহত হয়েছেন। আর চলতি বছরের শুরু থেকে ৪৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইহুদিরা।
আল-আকসায় যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ইসরাইলের আল-লিদ থেকে আসা ৩৩ বছর বয়সী আয়া আবু মুসা। তিনি বলেন, আল-আকসায় বহু ফিলিস্তিনিকে অংশ নিতে হবে। আল-আকসাকে আমরা একা রাখতে পারি না।