বরিশাল:বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ নিয়ে ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জীবিত ও অসচ্ছলদের নাম বাদ দিয়ে তালিকায় সচ্ছলদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে মৃত ব্যক্তিদের নামে চাল তুলে স্থানীয় ইউপি সদস্য তা আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে হতদরিদ্র-অসহায় মানুষ সরকারের এই কর্মসূচির সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ নিয়ে ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা বরিশাল জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফার দাবি- সব অভিযোগ সত্য নয়। প্রিন্ট ভুলের কারণে তালিকায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। সেটা সংশোধন করা হয়েছে।
জানা গেছে, গরিব অসহায় ব্যক্তিদের জন্য সরকার সারা দেশে ১০ টাকা কেজি ধরে চাল বিতরণের কর্মসূচি চালু করেছে। বাকেরগঞ্জের রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে এ কর্মসূচির তালিকায় অসচ্ছলদের বাদ দিয়ে সচ্ছলদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ তালিকায় আছে প্রবাসী ও সরকারি চাকরিজীবীর নামও। ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা তার নিজ বাড়ির অন্তত ৩২ জন তালিকাভুক্ত করেছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, এ বছরের জানুয়ারিতে তালিকা সংশোধন করেন ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা। সংশোধিত তালিকায় ১৩৯৫, ১৪১০, ১৪৫০, ১৫১৭, ১৫৪০, ১৫৫৭, ১৫৬৮, ১৬০৯, ১৩৪৭, ১৫১২নং কার্ডধারীরা জীবিত থাকলেও তাদের মৃত দেখিয়ে তালিকা সংশোধন করা হয়েছে। একইভাবে ১৫০৫, ১৬১৪, ৩০৫৫, ৩০৫৬, ৩০৬৩নং অসচ্ছল কার্ডধারীকে সচ্ছল দেখিয়ে তাদের নাম বাদ দিয়ে সচ্ছলদের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কার্ডধারী ১৫০৫ সুমন হাওলাদার, ১৬১৪ লাইজু বেগম, ৩০৫৫ লাইলি বেগম, ৩০৫৬ কাওসার হাওলাদার, ৩০৬৩ রানা খান সবাই নিজস্ব পাকা ভবনে বসবাস করেন।
১৬০৫, ১৪৫৮, ১৪৯১, ১৬০৮ ও ১৬১৭ নম্বর কার্ডধারী কয়েক বছর আগে মারা গেলেও তাদের নাম তালিকায় রাখা হয়েছে। তাদের নামে নিয়মিত চাল তুলছেন ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা। ৩০৫৬নং কার্ডধারী কাওসার হাওলাদার দুই বছর ধরে দুবাই থাকেন। তার নামেও নিয়মিত চাল নেওয়া হচ্ছে।
সুমাইয়া আক্তার কার্ড নং ১৩৪০ সরকারি হাসপাতালের নার্স। তিনি কোনোভাবেই এ কর্মসূচির আওতায় পড়েন না। ১৫৫৩, ১৬২১, ১৫৭৫, ১৫৭৬, ১৫৭১, ১৫২৮, ১৫১৯, ১৪৪২, ১৪২৩নং কার্ডধারী ব্যক্তিরা ৫নং ওয়ার্ডে স্থায়ী বসবাস করলেও তাদের স্থানান্তর দেখিয়ে বাদ দিয়ে ইউপি সদস্য তার পছন্দের লোকদের তালিকাভুক্ত করেছেন। কার্ড নং ১৪৭২ সালাউদ্দিন খানকে বাদ দিয়ে ইউপি সদস্যের আপন খালাতো ভাই অবিবাহিত সাইফুল ইসলামকে তালিকাভুক্ত করেছেন। একই পরিবারের চার সদস্যকে (৩০৫৪, ৩০৭০, ১৬১৭, ১৩৪০নং কার্ড) হতদরিদ্র কর্মসূচির কার্ড দেওয়া হয়েছে। অসচ্ছল ১৭ জনকে ভিজিডির আওতায় দেখিয়ে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।