পাকিস্তানকে অতিরিক্ত ২০০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ)। শাহবাজ শরীফ নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ঋণ ছাড় করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ এবং প্রবাসী আয় কমে যাওয়ায় পাকিস্তানের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ধাক্কা খায়। জ্বালানির বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধি অর্থনীতির ওপর চাপ আরও বাড়ায়। এ অবস্থায় ২০১৯ সালে তিন বছরের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৬০০ কোটি ডলার ঋণ নেয় পাকিস্তান।
তবে অর্থনীতিতে প্রতিশ্রুত সংস্কার আনা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেওয়ায় ঋণ বিতরণে ধীরগতি দেখা দেয়। তারপর আইএমএফকে আরও ঋণ দেওয়ার অনুরোধ করে পাকিস্তান। তাতে সম্মতি দিয়ে পাকিস্তানকে দেওয়া চলমান ৬০০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচিতে আরও ২০০ কোটি ডলার যোগ করার বিষয়ে একমত হয়েছে আইএমএফ। তবে এই ঋণ পেতে হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সরকারের নেওয়া বেশ কিছু প্রকল্প থেকে সরে আসতে হবে শাহবাজ সরকারকে।
ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের ধুঁকতে থাকা ব্যালেন্স অব পেমেন্ট এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্বাভাবিক রাখতে এই ঋণ দিচ্ছে আইএমএফ। এছাড়া ঋণ কর্মসূচির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর বিষয়েও সম্মত হয়েছে তারা।
রোববার (২৪ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে শাহবাজ সরকারের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল বলেন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্যাকেজে ৬০০ কোটি ডলার ঋণ নিলেও মাত্র ৩০০ কোটি ডলার হাতে পায় পাকিস্তান। বাকি থাকা ৩০০ কোটি ডলার ঋণ বাড়িয়ে ৫০০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে আইএমএফকে অনুরোধ জানানো হয়।
ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল বলেন, ঋণ বাড়ানোর অনুরোধের বিষয়ে আলোচনা করতে আইএমএফ কর্মকর্তা পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল পাকিস্তানে পাঠাবে। পাকিস্তানের দেওয়া প্রস্তাবের ওপর মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) থেকেই কারিগরি পর্যায়ের আলোচনা শুরু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
মিফতাহ ইসমাইল আরও বলেন, ‘বর্ধিত ঋণ কর্মসূচির বিষয়ে কর্মকর্তা পর্যায়ের চুক্তি শিগগিরই সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশা করছি।’ তবে আগামী বাজেটের আগেই ঋণের পরবর্তী অংশ প্রায় একশ কোটি ডলার পাওয়া যাবে কি না, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি।
এই ঋণ পেতে সম্প্রতি দেওয়া ভর্তুকি পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে এবং আসন্ন বাজেটে অন্যান্য পদক্ষেপ নিতে হবে। নতুন সরকারকে জ্বালানি ও বিদ্যুতে দেওয়া বিদ্যমান ভর্তুকি যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাহার করে নিতে সুযোগ দিতে সম্মত হয়েছে আইএমএফ।
বর্তমানে প্রতি লিটার পেট্রলে ২১ রুপি, প্রতি লিটার ডিজেলে ৫১ দশমিক ৫২ রুপি এবং প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে ৫ রুপি ভর্তুকি দিচ্ছে পাকিস্তান সরকার। জ্বালানিতে ভর্তুকি কমানো এবং ব্যবসায়ীদের দেওয়া কর দায়মুক্তি স্কিম বাতিলে আইএমএফের পরামর্শের বিষয়ে গত শুক্রবার একমত হয়েছেন মিফতাহ ইসমাইল।