সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন
প্রধান সংবাদ :
অভিযাত্রা যুব কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে, ঈদ বাজার সামগ্রী বিতরণ। বাবুগঞ্জ থানায় নতুন ওসি মো: জহিরুল ইসলাম যোগদান করেন। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকুন: চরমোনাই পীর শনিবার খোলা থাকছে সব সরকারি অফিস জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের পথে যেকোনো বাধাই মোকাবিলা করবো: নাহিদ ইসলাম বরিশালে বিটিসিএলের ৬৭ শতাংশ বিল বকেয়া সরকারি অফিসে দক্ষিণ রাকুদিয়া বাবুগঞ্জে শাজাহান ফকিড়ের দোকানের দরজার দুইটা তালা ভেঙ্গে মালামাল চুরি করেন চোর চক্র  খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মীরগঞ্জ মুলাদি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। রাকুদিয়া নতুন হাটে মুদি দোকানে চুরি কাশ্মীর হামলার পর চরম উত্তেজনা: ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপোড়েন

‘ঢাকা তৈরি হয়েছে সক্ষম, শক্তিশালী পুরুষের শহর হিসেবে’

একুশে বিডি ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২২
  • ১০৫ জন নিউজটি পড়েছেন

এই ঢাকা শহর তৈরি হয়েছে সক্ষম পুরুষের শহর, শক্তিশালী পুরুষের শহর হিসেবে। শিশুবান্ধব বা নারীবান্ধব কিংবা বয়স্ক মানুষের জন্য এ শহর তৈরি হয়নি। আমরা যে অন্তর্ভূক্তিমুলক নগরের কথা বলি, সে ধ্যান-ধারণার বাইরে এ নগর। এখানে যারা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে শক্তিশালী, শুধুমাত্র তারাই এ শহরটাকে উপভোগ করতে পারেন। বাকিরা শুধুমাত্র জীবিকার তাগিদে ও বেঁচে থাকার জন্য এ শহরে থাকেন।

সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাতে একাত্তরের নিয়মিত আয়োজন নূর সাফা জুলহাজের সঞ্চালনায় একাত্তর মঞ্চে যুক্ত হয়ে এমন মন্তব্য করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ।

ঢাকার কলাবাগানে তেঁতুলতলা মাঠ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা, শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার জন্য খোলা রাখার দাবিতে চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে অনেকগুলো প্রশ্ন উত্থাপন করেন একাত্তর মঞ্চের সঞ্চালক নূর সাফা জুলহাজ।

উল্লেখ্য, তেঁতুলতলা মাঠ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা, শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার জন্য খোলা রাখার দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জানুয়ারিতে এই মাঠেই শিশু-কিশোররা এই মাঠে খেলতে গেলে সেখানে তাদের কান ধরে ওঠবস করায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এর জেরে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারও করা হয়।

রোববার (২৪ এপ্রিল) আবার এই মাঠ নিয়ে কথা বলায় সৈয়দা রত্না ও তার ১৭ বছরের ছেলেকে থানা-হাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিবাদের মুখে ১৩ ঘণ্টা আটকে রেখে ছেড়েও দেয়া হয় তাদের।

এই একটি ঘটনা অনেকগুলো প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন জুলহাজ।

যেখানে নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঢাকায় শিশু-কিশোরদের জন্য ১৩০০ খেলার মাঠের প্রয়োজন, সেখানে মাঠ যদি উল্টো দখল হতে থাকে, তা নিয়ে প্রতিবাদ করা কি অপরাধ? কেন একজন প্রতিবাদকারী ও কিশোরকে জেল-হাজতে নেয়া হবে?

চট্টগ্রামেও সেই নগরীর ফুসফুস সিআরবির জমি বরাদ্দ হয়েছে হাসপাতাল তৈরির জন্য। সেখানেও চলছে নাগরিক প্রতিবাদ। তাই এখন প্রশ্ন উঠেছে, নগর উন্নয়ন বলতে কি আমরা শুধু কতগুলো বিল্ডিং, বড় বড় অবকাঠামো, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, পাতালরেল বুঝবো?

যে ঢাকা দূষিত শহর, অবাসযোগ্য শহর, যেখানে বাস করলে মানুষের গড় আয়ু কমে যায়, সেখানে কি খেলার মাঠ, গাছ, পার্ক, সবুজ থাকবে না? সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় এগুলোকে কি অদৌও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে?

এমন প্রশ্নগুলোর উত্তরের খোঁজে একাত্তর মঞ্চে যুক্ত করা হয় পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি ও নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদকে। পরবর্তীতে যুক্ত হন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও।

পার্ক, খেলার মাঠ নষ্ট না করার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা স্বত্বেও কি করে জেলা প্রশাসন পুলিশকে থানা করার জন্য তেঁতুলতলা মাঠ বরাদ্দ দেয়- সঞ্চালক নূর সাফা জুলহাজের এমন এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়েছেন নদীনালা,খালবিল, বন-জঙ্গল, মাঠ রক্ষায়। প্ল্যানিং কমিশনসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় সে নির্দেশনা মেনেও চলে।

মন্ত্রী বলেন, তবে ১৮ কোটি মানুষের এই দেশ আমাদের টানাটানির দেশ। টাকার টানাটানির চেয়ে জমির টানাটানি আমাদের দেশে বেশি। আমাদের পায়ের নিচে জমির পরিমাণ কম, মাথাপিছু জমির পরিমাণ কম।

জেলা প্রশাসনের ভূমি ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা দুই কোটি নাগরিকের একটি মেগাসিটি। সেখানে জেলা প্রশাসন মান্ধাতা আমলের ধ্যান-ধারণা নিয়ে ভূমি ব্যবস্থাপনা দেখছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের সেই দক্ষতা-সক্ষমতার ঘাটতি আছে।

তবে জেলা প্রশাসক নিজে এটা করেননি বলে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনাতেই নিশ্চয়ই এই বরাদ্দ হয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, এছাড়াও এটাতো ঠিক যে, আমাদের রাষ্ট্রের সেবা যারা করছে- পুলিশ হোক বা ম্যাজিস্ট্রেট হোক, ডাক্তার হোক বা ইঞ্জিনিয়ার, তাদের দাঁড়াবার জায়গাতো দিতে হবে, সবাইকে একোমোডেট করে চলতে হবে।

মন্ত্রীর এই সবাইকে একোমোডেট করা, বিবেচনায় নেয়া প্রসঙ্গে সঞ্চালক জুলহাজ বলেন, উন্নয়ন পরিকল্পনায় সকল কিছুই বিবেচনায় নিতে হবে, তবে কেন্দ্রীয় বিবেচনা হওয়া উচিৎ মানুষ। অথচ এই যে ঢাকা, যেখানে মাঠ নেই, পার্ক নেই, গাছ নেই, শুধু বহুতল ভবন হচ্ছে সারি সারি, বড় বড় অবকাঠামো হচ্ছে, কংক্রিটের জঙ্গল হচ্ছে। অবাসযোগ্য হয়ে পড়া এই ঢাকার এমন উন্নয়ন দর্শনকে কীভাবে দেখেন- সঞ্চালক এমন এক প্রশ্ন রাখেন নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদের কাছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, আমাদের ঢাকা শহরের উন্নয়নের যে ধারাবাহিকতা, কেন্দ্রমুখী উন্নয়নের যে ধারা অব্যাহত আছে, এটাই ঢাকাকে সবচেয়ে বসবাসের অযোগ্য করে ফেলেছে।

ড. আকতার মাহমুদ বলেন, এই ঢাকা শহর তৈরি হয়েছে সক্ষম পুরুষের শহর, শক্তিশালী পুরুষের শহর হিসেবে। শিশুবান্ধব বা নারীবান্ধব কিংবা বয়স্ক মানুষের জন্য এ শহর তৈরি হয়নি। আমরা যে অন্তর্ভূক্তিমুলক নগরের কথা বলি, সে ধ্যান-ধারণার বাইরে এ নগর। এখানে যারা সামজিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে শক্তিশালী, শুধুমাত্র তারাই এ শহরটাকে উপভোগ করতে পারেন। বাকিরা এ শহর উপভোগ করতে পারেন না। তারা শুধুমাত্র জীবিকার তাগিদে ও বেঁচে থাকার জন্য এ শহরে থাকেন।

তিনি বলেন, এই শহরে নারী, শিশু-কিশোর, শিক্ষার্থীদের যাবার কোনো জায়গা নেই। খেলার মাঠ নেই, পর্যাপ্ত পার্ক নেই, নেই কোনো লেক বা জলাধার। নদীর পাড়গুলোর আছে, তারই বা কি অবস্থা!

তিনি আরও বলেন, অ্যাপ্রোচে, এ নগরের দর্শনেই এই বড় অংশের মানুষেরা নেই। যদি থাকতো, তাহলে এই সক্ষম পুরুষের ঢাকা তৈরি হতো না। দালানের পর দালান তৈরি হচ্ছে, অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে, বহুতল ভবন তৈরি হচ্ছে, কিন্তু মানুষের দৈনন্দিন চাহিদার প্রাকৃতিক পরিবেশ কোথায়?

দৈনন্দিন জীবনে যদি পরিবেশ-প্রকৃতি না থাকে তাহলে মানুষ অসুস্থ, বিকারগ্রস্ত নাগরিকে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেন ড. আকতার মাহমুদ।

নিজের শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করে ড. মাহমুদ বলেন, আমাদের শৈশব-কৈশোরের কোনো বিকেল খেলাধুলা ছাড়া কাটবে, সেটা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। অথচ আমাদের শিশুদের বিকেল কাটছে মোবাইল-ট্যাবলেটে, কম্পিউটার বা টিভির সামনে বসে!

এই প্রসঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেন, খেলার মাঠ যাও এখনও আছে, সেসব মাঠেও আর আগের মতো খেলাধুলা করতে দেখা যায়না শিশু-কিশোর-তরুণদের। ফলে শুধুমাত্র মাঠের অপ্রতুলতা নয়, বর্তমান প্রজন্মের এই মোবাইল-ট্যাবলেটমুখী হওয়া, টিভি-কম্পিউটারমুখী হওয়ার হয়তো আরও কোনো গভীর কারণ আছে।

তবে যাই হোক, আমাদেরই এই অবস্থা থেকে একটা স্বাস্থ্যকর, পরিচ্ছন্ন ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে পরবর্তী প্রজন্মকে, বলেন মন্ত্রী।

একুশে বিডি ডটকম এর জন্য সারাদেশে সংবাদ দাতা নিয়োগ চলছে
যোগাযোগঃ- 01773411136,01778927878 ekusheybd2021@gmail.com

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন

Salat Times

    Dhaka, Bangladesh
    Monday, 9th June, 2025
    SalatTime
    Fajr3:44 AM
    Sunrise5:11 AM
    Zuhr11:58 AM
    Asr3:16 PM
    Magrib6:45 PM
    Isha8:12 PM
© All rights reserved © 2019 ekusheybd.com
Theme Customized BY mrhostbd.com
themesba-lates1749691102