বরিশাল:ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে লঞ্চের স্পেশাল সার্ভিসের শুরুতেই পন্টুন সংকটে পড়েছে বরিশাল নদী বন্দর। লঞ্চ সরাসরি বন্দরে নোঙর করতে না পারায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।
বৃহস্পতিবার রাত ১টায় ঢাকা থেকে ঘরমুখো যাত্রী নিয়ে ঈদযাত্রার প্রথম লঞ্চ বরিশাল নদী বন্দরে নোঙর করে। এরপর একের পর এক লঞ্চ ঘাটে নোঙর করতে থাকে। এ সময় পন্টুন সংকটে পড়ে লঞ্চগুলো। একটা লঞ্চের পেছনে আরেকটি লঞ্চ নোঙর করানো হয়।
পারাবাত-১২ লঞ্চের যাত্রী নবীন আহম্মেদ বলেন, ‘ঢাকা থেকে ভোর ৪টার দিকে বরিশালে আসে লঞ্চটি। তবে এটি ২০ মিনিট ধরে পারাবাত-১০ ও সুরভী-৮ লঞ্চের পেছনে নদীতে আটকে থাকে থাকে।
ঘাটে ভিড়তে পারেনি। পরে অনেক কষ্ট করে দুই লঞ্চের মাঝখান থেকে ঠেলেঠুলে আমাদের লঞ্চটি বন্দরে আসে।’ সুন্দরবন-১১ লঞ্চের যাত্রী ইবনে ইউসুফ বলেন, ‘ঘাটে এসে লঞ্চের পেছনে আমাদের লঞ্চ ১৫ মিনিটের মতো অপেক্ষা করতে বাধ্য হয়।
পরে একটা লঞ্চ একটু পাশে সরিয়ে নিলে আমাদের লঞ্চ ঘাটে ভিড়তে পেরেছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী বন্দরের এই অবস্থা। পন্টুনে লঞ্চগুলোকে যদি জায়গা দিতে না পারে তাহলে তা নোঙর করবে কোথায়।’
নদী বন্দরের পন্টুনের দায়িত্বরতরা বলছেন, দিনে দিনে লঞ্চের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বেড়েছে। তাই বন্দরে থাকা ১২০ ফুটের একটি পন্টুনে একসঙ্গে তিনটি লঞ্চকে বার্থিং করাতেই জায়গার সংকট দেখা দেয়।
বরিশাল নদী বন্দর সূত্রে জানা গেছে, আধুনিকখ্যাত বরিশাল নদী বন্দরে মোট পন্টুনের সংখ্যা ৬টি। এর মধ্যে দূরপাল্লার অর্থাৎ ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ বার্থিংয়ের জন্য ৩টি এবং বাকি তিনটি অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চের জন্য।
এগুলোর প্রতিটির দৈর্ঘ্য ১২০ ফুট হিসেবে মোট পন্টুনের দৈর্ঘ্য অর্থাৎ বার্থিং স্পেস ৭২০ ফুট। সে হিসাবে ৩৬০ ফুট জায়গা দূরপাল্লার রুটের লঞ্চের জন্য। অর্থাৎ তিনটি পন্টুনে এক সঙ্গে ৭টি লঞ্চ বার্থিং করা যায়।
সর্বোচ্চ হলে ভায়া ব্যতীত দৈনিক ট্রিপের ৮টি পর্যন্ত লঞ্চ একসঙ্গে বার্থিং করে বরিশাল নদী বন্দরে। তার ওপর এবার ঈদে ভায়াসহ প্রায় ২৮টি লঞ্চ চলাচল করছে বরিশাল নদী বন্দর থেকে।
ঢাকা-বরিশাল রুটের সুন্দরবন লঞ্চের মাস্টার মজিবর রহমান বলেন, ‘ঈদের সময় পন্টুন সংকটের কারণে একটি লঞ্চের পেছনে আরেকটি লঞ্চ বার্থিং করতে হয়।
যাত্রীদের ওঠা-নামা করতে এক লঞ্চ থেকে আরেক লঞ্চে যেতে হয়। এতে দুর্ঘটনাও ঘটছে। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কেউ কেউ লঞ্চ থেকে পড়েও যাচ্ছে। লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘বরিশাল নদী বন্দরের পন্টুন নিয়ে ভোগান্তি নতুন নয়।
আমরা বরাবরই এখানে পন্টুন সংখ্যা বাড়ানোর জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র কাছে দাবি জানিয়ে আসছি। তারা বছরের পর বছর ধরে আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছে।’
বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা বিআইডব্লিউটিএ`র যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বরিশাল নদী বন্দর আধুনিকায়ন এবং পন্টুন সংখ্যা বাড়ানোর প্রকল্পটি অনেক বড় একটি প্রকল্প।
এটিতে অর্থ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের টেন্ডার হয়েছে।