পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ভিজিএফ চাল বিতরণে স্বজনপ্রীতির অভিযোগে ভোলার লালমোহনের ফরাজগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসেন মুরাদকে প্রায় ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছে স্থানীয় জনতা।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে ওই ইউনিয়ন পরিষদের কক্ষে চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ রাখে জনতা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে পরিষদ থেকে বের হন ইউপি চেয়ারম্যান মুরাদ।
স্থানীয় জয়নাল আবেদিন, মো. নিরব ও নয়নসহ আরও অনেকে অভিযোগ করেন, এর আগে আমাদেরকে জেলে কার্ডের চাল না দিয়ে বিক্রি করে ফেলেছেন চেয়ারম্যান। আজ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ভিজিএফ চালের স্লিপ নিজের লোকদের মাঝে বণ্টন এবং মাস্টার রুল খালি রেখে চাল বিতরণের উদ্যোগ নেন চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদ।
অপরদিকে ওই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য লাইজু, শাকিল, শামিমসহ ৮ ইউপি সদস্যের অভিযোগ। কোনও মেম্বারকে চালের স্লিপ না দিয়ে সব স্লিপ চেয়ারম্যান একাই বিতরণ করেন এবং সকালে চাল বিতরণের উদ্যোগ নেন তিনি। এসময় কারা চাল পাচ্ছে তা যাচাইয়ের জন্য মাস্টার রুল দেখতে চাইলে তা দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন চেয়ারম্যান।
পরে মাস্টার রুল খালি থাকায় চাল বিতরণ বন্ধ করে দেন দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার মো. রফিকুল আমিন।
এদিকে পরিষদ থেকে চেয়ারম্যান বের হওয়ার পর চেয়ারম্যানের লোকজন ও উত্তেজিত জনতার মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়ের পক্ষের ৯ জন আহত হয়ে লালমোহন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চাল বিতরণে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ অস্বীকার করে ফরাজগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসেন মুরাদ বলেন, আজ চাল বিতরণের উদ্যোগ নিলে পরিষদের কয়েকজন বিপথগামী সদস্য সুবিধাভোগীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এজন্য চাল বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। আজ বিপথগামী মেম্বারদের প্ররোচনায় তার কয়েকজন লোকের উপর হামলা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদ।
লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাকসুদুর রহমান মুরাদ বলেন, চাল বিতরণ নিয়ে ফরাজগঞ্জে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ৯৯৯-এ থেকে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই।
উল্লেখ্য, ফরাজগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুরাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে অনাস্থা জানিয়ে তাকে বহিষ্কার/অপসারণ এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গত ২৫ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর কাছে লিখিত আবেদন করেন ওই ইউনিয়নের ৮ জন ইউপি সদস্য।