ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ৭২ বছরের মধ্যে চলতি এপ্রিল মাসটি দ্বিতীয় উষ্ণতম মাস। এ মাসে দিল্লিতে গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৮ ও ২৯ এপ্রিল দিল্লিতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ১২ বছরে দিনের তাপমাত্রার মধ্যে এপ্রিলে এটি ছিল সর্বোচ্চ।
ভারতের আবহাওয়া দফতর ইতিমধ্যে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ‘কমলা’ সতর্কতা সংকেত জারি করেছে। এর মানে হলো, এসব জায়গায় তাপপ্রবাহ মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। এ প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে বিদ্যুৎসংকট মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে। মার্চ ও এপ্রিলে গরমের কারণে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদাও। কিছু কিছু জায়গায় কয়লার সংকট বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত করছে।
স্থানীয়রা বলছেন, অসহনীয় আবহাওয়া পরিস্থিতিতে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। যদিও দিল্লি সরকার এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার মিলিয়ন গ্যালন পানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে।
তাপপ্রবাহের কারণে কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকার স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে, নয়তো ক্লাসের সময় কমিয়ে দিয়েছে। বিহারে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে স্কুলের পাঠদান শেষ করতে বলা হয়েছে।
মার্চ মাসে ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাপমাত্রা ছিল গত ১২২ বছরের সর্বোচ্চ। কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাতেও এর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা অনেকের।
ভারতে এপ্রিল ও মে মাসে হালকা গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টি হয়ে থাকে। এতে তাপমাত্রা কমে এবং বৃষ্টির পানিতে নোংরা ধূলিকণাগুলো মুছে যায়। তীব্র তাপপ্রবাহ আগামী মাসের শুরুর দিকেও থাকবে হবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা, যার অর্থ লাখ লাখ মানুষকে আরও কয়েক দিন বিপজ্জনক তাপমাত্রা এবং ঘণ্টাব্যাপী ব্ল্যাকআউট সহ্য করতে হবে। দেশে এখনও গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপাত শুরু হয়নি, যা সাধারণত এপ্রিল এবং মে মাসের তাপমাত্রা কমিয়ে আনে।
ভারতে ২০১০ সাল থেকে অতিরিক্ত উষ্ণতার কারণে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে প্রায়ই তাপপ্রবাহ দেখা যাচ্ছে।