বরগুনার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর প্রায় ৬শ পয়েন্টে অবাধে গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা শিকার করছেন স্থানীয় জেলেরা। জেলার অন্তত এক হাজার কিলোমিটার এলাকায় অবৈধভাবে এই রেণু শিকার করছেন তারা। রেণু শিকারে মশারি জাল ব্যবহারের কারণে প্রতিদিনই ধ্বংস হচ্ছে হাজারো প্রজাতির দেশীয় পোনা ও মাছের ডিমসহ নানা জলজ প্রাণী।
যদিও এসব জাল ব্যবহার ও পোনা শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। বিশেষ করে চৈত্র থেকে আষাঢ়, এ চার মাস গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেণু শিকার করে উপকূলীয় জেলে ও তাদের স্ত্রী-সন্তানরা।
বরগুনা সদরের গোলবুনিয়া, পুরাকাটা, বড়ইতলা, পাথরঘাটার কালমেঘা, নিলিমা পয়েন্ট, লালদিয়া, তালতলীর শুভসন্ধ্যা, জয়ালভাঙা, সোনাকাটা ও বগী এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীতে প্রায় ১০-১২ হাজার জেলে মশারি জাল টানছেন।
সেসব জালে আটকে থাকে বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেণুসহ হাজারো প্রজাতির মাছ ও মাছের ডিম এবং জলজ প্রাণী। জেলেরা একটি পাত্রে সেসব রেণু, মাছ, ডিম রেখে আবারও নেমে যাচ্ছেন মশারি জাল নিয়ে। আর নারী-শিশুরা পাত্রে রাখা ডিম, মাছ থেকে রেণুগুলো আলাদা করে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা, মাছের ডিম ও জলজ প্রাণী তীরেই ফেলে রাখছেন। আবার কেউ কেউ আলাদা পাত্রে রেখে দিচ্ছেন।
রেণু শিকারি সদর উপজেলার পুরাকাটা এলাকার জেলে লিটন মিয়া বলেন, প্রতিদিন যে রেণুগুলো ধরি, তা সপ্তাহ শেষে বিক্রি করি। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫ থেকে ১৬শ টাকা করে আয় হয়। চৈত্র, বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় এই চার মাস রেণু ধরি। বছরের বাকি ৮ মাস ফসলের ক্ষেতে মজুরের কাজ করি। রেণু ধরার সময় অন্য প্রজাতির অনেক পোনা মারা যায়। ক্ষতি হচ্ছে জানি কিন্তু কী করব, আমরা নিরূপায়। রেণু শিকার করেই আমাদের সংসার চলে।