ছোট্ট একটি কুকুর। কিন্তু তার কাজটা অনেক বড়। বীরোচিত কাজের মধ্য দিয়ে হাজারো মানুষের ভালোবাসা ও প্রশংসা কুড়াচ্ছে সে। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রেসিডেনশিয়াল মেডেলও জিতে নিয়েছে। কুকুরটিকে ইংরেজিতে ‘বোম্ব স্নিফিং ডগ’ তথা বোমা শনাক্তকারী বলে ডাকা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, প্যাট্রন নামের এই কুকুরটি ইউক্রেনে রাশিয়ার ছোড়া শত শত অবিস্ফোরিত বোমা নিষ্ক্রিয় করতে সহায়তা করেছে। এর মধ্য দিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে সে।
তার এই বীরোচিত কর্ম ও ‘দেশপ্রেম’-এর জন্য তাকে পুরস্কৃত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। পুরস্কৃত করা হয়েছে তার মালিককেও।
ইউক্রেনে চলমান রুশ সামরিক অভিযানের মধ্যেই গত রোববার (৮ মে) কিয়েভ সফরে আসেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এদিন রাজধানীর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর উপস্থিতিতেই প্যাট্রন ও তার মালিক সিভিল প্রোটেকশন সার্ভিসের মিকাইলো ইলিয়েভের হাতে পুরস্কারের পদক তুলে দেওয়া হয়।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনের সেসব বীরকে পুরস্কার দিতে চাই, যারা আমাদের ভূমিকে মাইনমুক্ত করতে কাজ করছে।’ ছোট্ট কুকুরটিকে রণাঙ্গনের ‘বীরযোদ্ধা’ বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বীরদের সঙ্গে একত্রে কাজ করে যাচ্ছে একটি ছোট্ট ও চমৎকার যোদ্ধা প্যাট্রন।’
প্যাট্রনের মালিক মিকাইলো ইলিয়েভ ইউক্রেনের সিভিল প্রোটেকশন সার্ভিসে মেজর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নিজের প্রশিক্ষিত কুকুর প্যাট্রনকে নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে কাজ করছেন তিনি।
এক প্রতিবেদনমতে, রাশিয়ার সেনা অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক বিস্ফোরক শনাক্ত করেছে তার কুকুরটি। ফলে সেগুলো বিস্ফোরণের আগেই উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। এতে অনেক মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। এর ফলে ইউক্রেনজুড়ে ‘দেশপ্রেমী’ কুকুর হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে প্যাট্রন।
এদিন প্যাট্রনের একটি ছবি প্রকাশ করে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্যাট্রনের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেদিন থেকে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, আর পাঁচজন সেনা ও পুলিশকর্মীর মতোই দিন-রাত ভুলে কাজ করে চলেছে সে। সারাক্ষণ বিস্ফোরক খুঁজছে প্যাট্রন।
প্যাট্রনের বয়স মাত্র দু-বছর। সে জ্যাক রাসেল টেরিয়ার প্রজাতির কুকুর। মূলত বিস্ফোরক খুঁজে বের করার জন্যই তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্যাট্রন ইউক্রেনের পুলিশ বিভাগের সদস্য। সূত্র: এনপিআর ও ওয়াশিংটন পোস্ট।