গত বছর ক্ষমতায় বসার পর তালেবান সরকারের প্রথম বাজেটে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে ঘাটতির পরিমাণ ৪৪ বিলিয়ন আফগানি (আফগানিস্থানের মুদ্রা)। ডলারের হিসাবে এ ঘাটতির পরিমাণ ৫০১ মিলিয়ন ডলার।
শনিবার (১৪ মে) দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী আবদুল সালাম হানাফি এ তথ্য দেন। খবর রয়টার্স।
তবে ঘাটতি বাজেট সামাল দিতে আফগানিস্তান কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, সে ব্যাপারে কিছু জানায়নি তালেবান সরকার। উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্ট মাসে বাজেট ঘোষণা করে সরকার।
বাজেট সম্পর্কে আবদুল সালাম হানাফি বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেট থেকে খরচ হবে ২৩১ দশমিক ৪ বিলিয়ন আফগানি ও রাজস্ব আসবে ১৮৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন আফগানি। এতে করে চলতি অর্থবছরের বাজেটে একটি বড় অংকের ঘাটতি দেখা দিবে।
দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আহমেদ ওয়ালী হাকমল বলেন, ‘রাষ্ট্রের রাজস্ব সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান যেমন- কাস্টমস, মন্ত্রণালয় ও খানিজ সম্পদভিত্তিক সংস্থা থেকে আমরা রাজস্ব আদায় করছি। বাজেটের একটি অনেক বড় অংশের জোগান দিচ্ছে আমাদের রাজস্বখাত।’
এর আগে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের হটিয়ে আফগানিস্তান দখল করে নিলে দেশটি পুরোপুরি বিদেশি সাহায্যের দ্বারস্থ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে এত দিন পশ্চিমা সাহায্যের মাধ্যমেই আফগানিস্তান তাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।
তবে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে তাদের সব সেনা প্রত্যাহার করে নিলে, তালেবানরা দেশের শাসন ক্ষমতা দখল করে। এতে করে পশ্চিমা বিশ্ব দেশটি থেকে তাদের সাহায্যের হাত গুঁটিয়ে নেয়।
বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা জানিয়েছে ৫০ মিলিয়ন আফগান নাগরিককে তারা সাহায্য করবে। তবে সংস্থাগুলো সরকারকে কোনো ধরনের আর্থিক সাহায্য করছে না। নিজদের সরাসরি হস্তক্ষেপে অসহায় আফগান নাগরিককে এই সাহায্য করবে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।
হানাফি জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটের মেয়াদকাল আগামী বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তালেবান সরকারের মন্ত্রিপরিষদে বাজেটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ও দেশটির সুপ্রিম লিডার হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদা বাজেট চূড়ান্ত করেছেন।
এই বাজেট থেকে ২৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন আফগানি দেশটির উন্নয়নখাতে ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছেন হানাফি। তিনি বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে সব সময়ে সোচ্চার। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য যা যা করণীয় আমরা করব।’
এদিকে বছরের শুরুতে মেয়েদের পড়াশোনায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে আফগানিস্তান। সেসময়ে আফগানিস্তানের এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দেশটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল বিশ্বব্যাংক।