সাদা শ্রেষ্ঠত্ববাদকে ‘রাজনীতিতে বিদ্যমান বিষ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার (১৭ মে) নিউইয়র্কের বাফেলো পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, সাদা শ্রেষ্ঠত্ববাদই শেষ কথা না।-খবর বিবিসি ও নিউইয়র্ক টাইমসের
এর আগে শনিবার বর্ণবাদী ঘৃণায় উৎসাহিত হয়ে বাফেলোর একটি বিপণিবিতানে হামলা চালিয়ে ১০ কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যা করে এক শ্বেতাঙ্গ তরুণ। অনলাইনে পোস্ট করা নথিতে নিজেকে ফ্যাসিবাদী ও শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী বলে দাবি করেছে সে।
তাকে ঘৃণায় বিশ্বাসী সংখ্যালঘুদের একজন হিসেবে আখ্যায়িত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। হতাহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। বললেন, যারা আমেরিকাকে ভালোবাসার ভান করেন, তাদের অক্সিজেনের বড় উৎস ঘৃণা ও আতঙ্ক। তারা আমেরিকাকে কোনোভাবেই বুঝতে চেষ্টা করছেন না।
মিথ্যা প্রত্যাখ্যানে মার্কিন নাগরিকদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতা, রাজনৈতিক স্বার্থ ও সুবিধা পাওয়ার জন্য মিথ্যা ছড়ানোর নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা এবার আর নীরব থাকতে পারছি না।
এ সময়ে নিহতদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানান বাইডেন। বাফেলো মেয়র বিরন ব্রাউন বলেন, এ ঘটনা প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বন্দুক নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি আরও আশাবাদী বলে মনে হয়েছে।
হামলাকারী তরুণ পেইটন এস গেন্ড্রনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনলাইনে পোস্ট করা তার বিদ্বেষপূর্ণ লেখাটি ১৮০ পৃষ্ঠার। এর পুরোটাজুড়ে বারবার বোঝানো হয়েছে যে শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানরা অন্য বর্ণের মানুষের সংখ্যাধিক্যের কারণে বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে একাধিক সহিংসতায় জড়িত বন্দুকধারীরা ওই প্রতিস্থাপন তত্ত্ব নামে পরিচিত বর্ণবাদী ধারণার উল্লেখ করেছেন।
ধারণাটি একসময় কট্টর ডানপন্থী অংশের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল, কিন্তু ক্রমেই এটি যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারায় চলে আসছে। রাজনীতিকদের কথোপকথন এমনকি জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলোতেও এই বর্ণবাদী ধারণা এখন নিয়মিতই আলোচিত হচ্ছে।
চরমপন্থী এই ধারণাটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই যুক্তরাষ্ট্র ও এর বাইরে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে।
২০১৯ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় ইহুদিদের প্রার্থনালয় থেকে একই বছর নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে ৫১ ব্যক্তিকে হত্যার পেছনেও ওই বিশ্বাস কাজ করেছে। বাফেলোর পেইটনের মতো ক্রাইস্টচার্চের খুনিও শরীরে লাগানো ক্যামেরায় ওই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সরাসরি সম্প্রচার করেছিল।