সিলেট অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে দুর্গত মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে সরকার এখন পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে উৎসব আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভারতের সাথে পানি সমস্যার সমাধান না করা এবং দেশের ভেতরে নিম্নমানের বাঁধ নির্মাণ করায় মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। অবিলম্বে এসব বন্যা দুর্গত মানুষের দাঁড়াতে সরকারের প্রতি আহবানও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ভাটারায় ঢাকা উত্তরের কয়েকটি ওয়ার্ডে বিএনপির সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ফখরুল অভিযোগ করেন, সিলেট, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার বন্যাদুর্গত মানুষের দিকে না তাকিয়ে সরকার পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে ব্যস্ত।
তিনি বলেন, সারাদেশে আজ বন্যার কড়াল ছোবল। সিলেট-সুনামগঞ্জ থেকে শুরু করে উত্তর নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম—পুরো অঞ্চল বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। গতকালকের সংবাদ, ফারাক্কার সব দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা, মেঘনা, যমুনার পানি বাড়তে থাকবে এবং এই দেশের মানুষকে ভাসিয়ে নেবে। বহু দিনের কষ্টের ফসল নষ্ট করবে। কেন এই বন্যা? জলবায়ু পরিবর্তনে বন্যা আসতে পারে। সেই বন্যা ঠেকানো এবং ক্ষতি কমানো সরকারে দায়িত্ব।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, এই সরকার গত এক যুগেও ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন চুক্তি করতে সক্ষম হয়নি। বহুদিন ধরে তিস্তার পানি চুক্তির মুলা দেখানো হচ্ছে কিন্তু তা আজ পর্যন্ত করা হয়নি। হঠাৎ করে ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় ঢল সামলানো সম্ভব হয় না।
অবিলম্ব বন্যা কবলিত এলাকাগুলোকে দুর্গম অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা দেয়ার দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই দুঃসময়ে সরকার ব্যস্ত হয়ে আছে উৎসব নিয়ে। তারা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে এত ব্যস্ত যে মানুষের কল্যাণের দিকে তাকানোর কোনো সময় নেই।
যেসব হাওড় ও নদীগুলোতে বাঁধ এবং ব্রিজ দেওয়া হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে এবং এত দুর্নীতি হয়েছে যে সব বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। যেসব রাস্তা নতুন তৈরি করেছিল অপরিকল্পিতভাবে সেগুলো ভেঙে যাচ্ছে, বলেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি আরও বলেন, নতুন একটা গান শুরু করেছে বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে সেখানে নাকি একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। জাতির সামনে বলেন সেই দুর্ঘটনাটা কী? কারা করছে? পরিষ্কার করে বলেন। আমরা তো দেখছি, আপনারাই বরাবর এসব কথা বলেন। নিজেরা দুর্ঘটনা ঘটান এবং তারপর তা বিএনপির ওপর চাপিয়ে দেন।
জনগণ এখন আওয়ামী লীগের প্রকৃত পরিচয় জেনে গেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। পত্রিকায় দেখছি, বিদ্যুতের দাম আরও বাড়ানো হবে। গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। আপনারা সরকারে কেন আছেন? মানুষের পকেট থেকে টাকা কেটে নেবেন আর আপনাদের দুর্নীতির পাহাড় গড়ে উঠবে, বলেন ফখরুল।
৩৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক এসএম কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান এবং সদস্য সচিব আমিনুল হক বক্তব্য রাখেন।