শুধু আইনজীবী বা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নয়, গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনা ৪৩৭ কোটি টাকা না দেয়ার জন্য বিচারকের সাথেও লেনদেনের তথ্য জমা হয়েছে হাইকোর্টে।
২৫ কোটি টাকা অনিয়ম এবং মামলাকে প্রভাবিত করতে লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আদালত মামলাটি রিকল করে। এরপর থেকেই গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহম্মদ ইউনূসের জালিয়াতির নথি মিলতে শুরু করেছে।
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস সবশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিযোগের জবাবনামায় দাবি করেছেন, তিনি কোনোকালেই গ্রামীণফোনের কোনো শেয়ারের মালিক ছিলেন না। শেয়ার কেনার কোনো ইচ্ছাও তার ছিল না। তার আগের লাইনে ইউনূসের দাবি গ্রামীণফোনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শেয়ার গ্রামীণ টেলিকম।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গ্রামীণ টেলিকমের সেই শেয়ারের পরিমাণ ৩৪ শতাংশ। বাৎসরিক আয় হাজার ১,২০০ কোটি টাকা। যা গ্রামের দরিদ্র নারীদের পল্লীফোন কর্মসূচির নামে টেলিফোন সেবা পৌঁছে দেয়ার কথা।
সেবাদানকারী এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনূস। গ্রামীণফোন থেকে আসা হাজার কোটি টাকা কোন অলাভজনক খাতে ব্যয় হবে তার সিদ্ধান্ত তিনিই নেন।
তবে, আদালতে জমা হওয়া নথি ঘেঁটে দেখা যায়, নিজেদের নিয়োগ করা লবিস্ট ফার্মের বিষয়ে তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, শ্রম আদালতের সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহনের উপর নির্ভর করে গ্রামীণ টেলিকম যে পেমেন্ট দিয়েছে সেই পুরো চেক তিনি একাই হজম করেছেন। যদিও এটাকে মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছেন শাহজাহান।
মামলা প্রভাবিত করতে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছিলেন মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকম ১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা লবিস্ট ফি দেওয়ার চুক্তি করে। যদিও বাংলাদেশের আইনে বিচারাধীন মামলা প্রভাবিত করার চুক্তি অবৈধ।
এদিকে পাঁচ বছর মামলা লড়ে ১৭৬ জন শ্রমিক কর্মচারীর পাওনা ৪৩৭ কোটি টাকা সমঝোতার মাধ্যমে দিয়েছে গ্রামীণ টেলিকম।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিচারাধীন মামলা প্রত্যাহার করে আদালতের বাইরের মীমাংসাতেও অবৈধ লেনদেন হয়েছে। যার ভাগের ১০ কোটি টাকা গিয়েছে মামলার আইনজীবী ইউসূফ আলীর ব্যাংক হিসাবে।
আর ১৫ কোটি টাকা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের হিসাবে। আদালতের ধারণা, এখানে বেরিয়ে আসবে গ্রামীণ টেলিকমের অনৈতিকতার প্রমাণ।