দুয়েকটি ধর্মাবলম্বী ছাড়া বিশ্বের বেশিরভাড় মানুষের কাছে গরুর মাংস একটি প্রিয় খাবার। ভোগযোগ্য হালাল পশুর মধ্যে বিশ্বব্যাপী গরুর চাহিদাই বেশি। কিন্তু বর্তমান সময়ে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাবে চিকিৎসকদের দৃষ্টিতে গরুর মাংস কারো কারো জন্য নিষিদ্ধ।
বর্তমানে প্রতিদিনই প্রতি ঘরে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। ডায়বেটিস, হৃদরোগ, হাই-পেসারসহ সব দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত অনেক মানুষ। আর ডাক্তাররা বিশেষত গরুর গোশত খেতে নিষেধ করে থাকেন এসব রোগীদের।
গরুর মাংস কী আসলেই ক্ষতিকর? এ বিষয়ে ইসলাম কী বলে? এ বিষয়ে ইসলামের সমাধান কী? এত বড় ক্ষতিকর জিনিসই যদি হয় তাহলে ইসলামে কী এর কোনো ব্যাখ্যা নেই?
অবশ্যই আছে। আজ থেকে সাড়ে চৌদ্দশত বছর পূর্বে মহানী (স.) গরুর মাংসের ব্যাপারে উম্মতকে সর্তক করে গেছেন। গরুর মাংস খাওয়া অবশ্যই হালাল। কিন্তু যেহেতু খেলে ক্ষতি হয় এজন্য এর থেকে বিরত থাকা কথা বলেছেন মহানবী (স.) বলা হয়েছে।
কিন্তু আমরা শরীয়তের অন্যান্য বিষয়ের মত এ বিষয়টিও আমরা অবহেলা করেছি। যার দ্রুন মারাত্মক ব্যাধি আমাদের সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে।
হযরত হাকেম এবং আবু নাঈম (র.) বর্ণনা করেন, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, “তোমরা অবশ্যই গরুর দুধ পান করো। কেননা তাতে শিফা (আরোগ্য) রয়েছে। সেই সঙ্গে ঘি/মাখন ভক্ষণ করো। কেননা তাও শিফা দানকারী (আরোগ্য দানকারী)। তবে এর গোশত/মাংস থেকে বিরত থাকো। কেননা তাতে রয়েছে রোগব্যাধি।” (সূত্র : হাশিয়া মুসনাদে ইমাম আযম)
অর্থাৎ গরুর দুধ ও ঘি স্বাস্থ্যকর হলেও মাংস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। নবীজির এ নির্দেশনা আজ থেকে চৌদ্দশত বছর আগে বলে গেছেন।
পরবর্তীতে এই বিষেয়ে গবেষণা করেছেন আধুনিক যুগের গবেষকরা। মেডিক্যাল গবেষকরা স্বীকার করেছেন গরুর গোশতে এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এ ব্যাকটেরিয়া টি.বি. (যক্ষা) রোগ এবং হৃৎপিণ্ডের মারাত্মক রোগ হয়ে থাকে।
স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞগণ এ বিষয়ে গভীর অনুসন্ধান চালিয়ে এ তথ্য আবিষ্কার করেছেন যে, গরুর গোশত যেমন হৃৎপিণ্ডের ফোঁড়ার কারণ হয়ে থাকে অনুরূপভাবে এর ফলে মস্তিষ্কের এক প্রকার মারাত্মক রোগ দেখা দেয়। যাকে মেডিক্যাল বিজ্ঞানে মেড-কাউ ডিজিজ বলা হয়।
ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিফেন ডোরাল এক বক্তব্যে এ কথার সত্যায়ন করেছেন যে, গরুর গোশত ভক্ষণ ও ব্যবহারে এমন এক প্রকার রোগ অস্তিত্ব লাভ করে, যার নাম সি.জি.ডি। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি দেওয়ানা ও মাতাল হয়ে যায়। স্মরণশক্তি হারিয়ে ফেলে।
এ কথাটি সর্বস্বীকৃতি লাভ করেছে যে, গরুর গোশত ভক্ষণে হৃদরোগ অতি মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য সীমিত পরিমাণে মাংস খেতে হবে। খুব বেশি মাংস পরিহার করা জরুরি।