চীনা পণ্যের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে। কারণ কাঁচামালের জন্য চীনের ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশ।
শনিবার (৯ জুলাই) স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএনআই।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, চীনা পণ্যের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের পোশাকশিল্পকে সংকটের দিকে নিয়ে যাবে বলে মনে করছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকরা।
বাংলাদেশ চীনের ওপর নির্ভরশীল কারণ দেশটি অন্যান্য দেশের তুলনায় ভৌগলিকভাবে কাছাকাছি এবং অল্প সময়ের মধ্যে চীন থেকে পণ্য আমদানির সুবিধা রয়েছে।
কোভিডের আগে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিল। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে। এরপর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়।
চীনা প্রযুক্তি নির্মাতা হুয়াওয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া ২০২১ সালে জিনজিয়াংয়ের টমেটো এবং তুলাও নিষিদ্ধ করেছে দেশটি।
এরপর উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট বা শ্রম আইন ইস্যুতে চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াংয়ে উৎপাদিত সব পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, উইঘুর মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে। শিনজিয়াং প্রদেশে যেখানে তুলা চাষ করা হয়, সেখানে শিশুশ্রম ও শ্রম আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে; যা মার্কিন মানবাধিকার ও শ্রম আইনে অনুমোদন নেই। এ কারণে এখানে উৎপাদিত পণ্য নিষিদ্ধ করেছে দেশটি।
শুধু তাই নয়, যেসব দেশ ও সংস্থা চীনের এই অঞ্চল থেকে পণ্য আমদানি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করবে তাদেরকে পণ্যগুলি বাধ্যতামূলক শ্রম দিয়ে তৈরি করা হয়নি বলে নিশ্চিত করতে হবে।
জিনজিয়াংয়ে মুসলমানদের থাকতে বাধ্য করার জন্য চীনকে বারবার অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে চীনের কর্মকাণ্ড মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যার শামিল বলে মনে করছে দেশটি।
উইঘুর মুসলমানদের গণ-বন্দিশিবিরে অমানবিক অবস্থায় রাখা হচ্ছে বলেও অভিযোগও রয়েছে।
জিনজিয়াং প্রদেশ থেকে দেশে তৈরি পোশাক শিল্পে ব্যবহৃত তুলার ৩০ ভাগ আসতো। এতে অন্য দেশ থেকে তুলা আমদানি করতে ব্যয় বেড়ে যাবে। ফলে সুতা তৈরি সর্বোপরি তৈরি পোশাকের উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, যার প্রভাব রপ্তানিতে পড়বে।
এদিকে দেশীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন থেকে আমদানি করা তুলা যেন জিনজিয়াংয়ের না হয়, সেই নিশ্চয়তা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ সূত্র। এ ছাড়া জিনজিয়াংয়ের পণ্য শনাক্তকরণের যন্ত্র যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
চীনা পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় দেশটি থেকে অন্যান্য দেশগুলোর ক্রয়াদেশ ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশে আসবে বলে ধারণা করছেন পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া ভারত ও পাকিস্তানও এর সুবিধা ভোগ করবে।