বিগত দু’বছরে কখনই বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামেনি। কিন্তু এবার আর শেষ রক্ষা হলো না। কমে গেছে রিজার্ভের পরিমাণ। বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে (এসিইউ) আমদানির অর্থ পরিশোধের অনুমোদন দেওয়ার পর রিজার্ভ কমে যায়।
বাংলাদেশ গত সপ্তাহে এসিইউ এর সঙ্গে ১ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের আমদানি পেমেন্ট নিষ্পত্তি করেছে। এর ফলে প্রায় দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো আজ রিজার্ভ ৩৯ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।
এসিইউ হলো এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী দেশগুলি আঞ্চলিক লেনদেনের জন্য আমদানি পেমেন্ট নিষ্পত্তি করে।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এসিইউ-এর সদস্য। ইরানের রাজধানী তেহরানে এর সদর দপ্তর। এই ব্যবস্থায় দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করতে হয়।
এদিকে রিজার্ভে ধস ঠেকাতে ইতোমধ্যে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এরমধ্যে সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যাংকারদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, বিলাসবহুল আমদানি কমিয়ে আনা, রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহ প্রদান অন্যতম। কিন্তু এত কিছুর পরেও গত কয়েক মাস ধরে রফতানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহের তুলনায় আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় চাপ পড়েছে রিজার্ভে, কমে গেছে রিজার্ভের পরিমাণ।
গত অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাসের মধ্যে আমদানি ব্যয় ৩৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৫ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। সেই তুলনায় রপ্তানি আয় ৩৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৪ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে গত ছয় বছরের মধ্যে প্রথমবার রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। গত অর্থবছরে প্রবাসীরা অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে অর্থ পাঠানোয় রেমিট্যান্স আসে ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার।