ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি শেষ। প্রথম কর্মদিবসও অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু ছুটি শেষের দিন বা প্রথম কর্মদিবসের দিনও বরিশাল থেকে ফিরতি পথে যাত্রীদের চাপ নেই নৌ, সড়ক ও আকাশ পথে। ভোগান্তি ছাড়াই মানুষ ধারাবাহিকভাবে কর্মস্থলে ফিরছে বিধায় যাতায়াতের কোনো পরিবহনে অতিরিক্ত চাপ পড়েনি বলে মনে করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে যাত্রী সংকটে ৩টি লঞ্চ তাদের যাত্রা স্থগিত করেছে।
সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ঈদুল আজহার তিন দিনের ছুটি শেষ হয়েছে সোমবার (১১ জুলাই)। ওইদিনও বরিশাল থেকে ঢাকা রুটে উল্লেখযোগ্য চাপ লক্ষ্য করা যায়নি। আজ মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বরিশাল নদী বন্দর, বিমানবন্দর ও নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে।
বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম মাসরেক বাবলু বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক পথে এবারের ঈদযাত্রায় কোনো চাপ পড়েনি। প্রতি বছর যেভাবে চাপ পড়ে তেমন চাপ আজকে পর্যন্ত দেখছি না। তবে যতগুলো বাস যাচ্ছে তার কোনো বাসই খালি যাচ্ছে না। বিগত বছর অনেক বাসে দাঁড়িয়ে বা ছাদে বসেও যাত্রীদের যেতে হয়েছে। কিন্তু এ বছর সেই চিত্র দেখছি না।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর সুফল মানুষ পেতে শুরু করেছে। তার কারণ সেতুর জন্য রাত-দিন বিরতিহীনভাবে গাড়ি চলাচল করেছে। যাতে করে একটি নির্ধারিত সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি, ভিড়ও বাড়েনি।
বিআরটিসি বরিশাল ডিপোর ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছুটি শেষ হলেও কোনো ধরনের যাত্রীর চাপ আমরা লক্ষ্য করছি না। আজ তুলনামূলক আরও চাপ কম। আমরা ধারণা করছি, আগামী শুক্র-শনিবার নাগাদ চাপ বাড়তে পারে।
যাত্রী সংকটের আরও করুণ চিত্র বরিশাল নদী বন্দরে। স্পেশাল সার্ভিস সিডিউলে মোট ১১টি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ইতোমধ্যে যাত্রী না হওয়ায় তিনটি লঞ্চ তাদের যাত্রা স্থগিত করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল নদী বন্দরের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন। তিনি জানান, মোট ১১টি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনটি লঞ্চ পন্টুন থেকে সরিয়ে নিয়েছে। মালিকপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন যাত্রী সংকটের কারণে তারা ঢাকা যাবেন না।
এই কর্মকর্তা বলেন, এমভি পারাবত-১০, কীর্তনখোলা-১০ ও সুরভী-৮ তাদের যাত্রা স্থগিত করেছে। এ ছাড়া বাকি ৮টি লঞ্চ পারাবত ১১, পারাবত ১২, সুন্দরবন ১০, অ্যাডভেঞ্জার ৯, সুরভী ৭, মানামী, কুয়াকাটা ২ ও প্রিন্স আওলাদ ১০ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাবে।
কবির হোসেন বলেন, বিগত দিনে যে পরিমাণের ভিড় হতো তার কোনো নমুনাই নেই। স্বাভাবিক সময়ে যেমন ভিড় হয় তেমনই। ঈদের কোনো প্রভাবই নেই নৌ-রুটে। পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় যাত্রী কমে গেছে লঞ্চে।
বরিশাল বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক আবদুর রহিম তালুকদার বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা এবং নভোএয়ার এয়ারলাইন্স বরিশাল থেকে যাত্রী নিয়ে অন্য সময়ের মতোই ঢাকায় যাচ্ছে। বাড়তি কোনো ফ্লাইট বিমান সংস্থা যুক্ত করেছে বলে জানা নেই। এবারের ঈদ যাত্রা দক্ষিণাঞ্চলের সবার জন্যই শান্তিপূর্ণ ছিল।