শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন
প্রধান সংবাদ :
বরিশালের ফেয়ার হেলথ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু! বরিশালে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা পেলেন ৩ শতাধিক নারী-পুরুষ বরিশাল নগরীর কাউনিয়া সাবান ফ্যাক্টরির রাস্তার বেহাল দশা বাবুগঞ্জে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সদস্য তারবিয়াত অনুষ্ঠিত।  বাবুগঞ্জে জামায়াতে ইসলামী নেতাদের নদী ভাঙ্গন কবলিত স্থান পরিদর্শন  বাবুগঞ্জ রাকুদিয়া নতুন হাট বাজার সংলগ্ন, মিথ্যা মামলা সাজা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতেবিক্ষোভ মিছিল। বাবুগঞ্জের দেহেরগতি ও চাঁদপাশায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত । লিটু সিকদার হত্যা মামলার ২ নং আসামী  মিলন গাজী, ঢাকা থেকে গ্রেফতার । বাবুগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের যৌথ পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত। বরিশাল বাবুগঞ্জে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ।

থমকে আছে ভাঙ্গা-বরিশাল-কুয়াকাটা রেললাইন প্রকল্পের কাজ

মোঃ হোসেন, বরিশাল জেলা প্রতিনিধি।
  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ২০ জুলাই, ২০২২
  • ১৫১ জন নিউজটি পড়েছেন

বরিশাল:ছয় বছর ধরে সম্ভাব্যতা যাচাই আর অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি চিহ্নিতকরণের পর থমকে আছে ভাঙ্গা-বরিশাল-কুয়াকাটা রেললাইন প্রকল্পের কাজ। অর্থ সঙ্কুলানের বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এ কাজ আর এগোবে না-এমনটাই বলছেন রেলের কর্মকর্তারা।

রেললাইন প্রকল্পের এ দীর্ঘসূত্রতায় বিপাকে পড়েছেন প্রকল্পের জন্য চিহ্নিত করা জমির মালিকরা। বছর পাঁচেক আগে তাদের বাড়িঘর-জমিতে রেললাইন যাওয়ার চিহ্ন দিয়ে এসেছেন কর্মকর্তারা।

বলে এসেছেন এসব জমি বিক্রি কিংবা সেখানে থাকা অবকাঠামোর কোনো সংস্কার, পরিবর্তন-পরিবর্ধন না করতে। ফলে জরুরি প্রয়োজনেও হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে তাদের।

রেলওয়ের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে না কিছুই। বিষয়টি নিয়ে পথে নামার চিন্তাভাবনা করছেন তারা। চিহ্নিত করা জমির বিষয়ে সরকারের সুস্পষ্ট ঘোষণা চাইছেন এসব জমির মালিক।

পদ্মা সেতুর সঙ্গে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন নেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল শুরু থেকেই। পরে তা সম্প্রসারণের আলোচনা হয় বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত। ২০১৬ সালে এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরির কাজ শুরু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

এজন্য নিয়োগ করা হয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। ভাঙ্গা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের লাভ লোকসান নিরূপণের পাশাপাশি ঠিক কতটুকু জমি অধিগ্রহণ করতে হবে তা চিহ্নিত করতে ওই প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা। পরে অবশ্য আরও ৭ কোটি টাকা বাড়িয়ে এই অঙ্ক করা হয় ৪৯ কোটি ৯৬ লাখ ৪৫ হাজার।

রেলওয়ে সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, প্রথমে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন বসানোর কথা থাকলেও পরে তা আরও ২৪ কিলোমিটার বাড়িয়ে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

সে অনুযায়ী বাড়তি এই কাজের জন্য বাড়ানো হয় ৭ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জন্য ধরা হয় ৪৯ কোটি ৩০ লাখ ৯০ হাজার এবং বাকি টাকা বিজ্ঞাপনসহ অন্যান্য খাতে।

২০১৬ সালে শুরু হওয়া সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রতিবেদন ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে রেলওয়ের কাছে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা পারেনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। সময় প্রার্থনা করলে প্রথম দফায় ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাদের।

বর্ধিত সময়েও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি তারা। এরপর আরও দুদফায় প্রথমে ২০২১-এর জুন এবং সর্বশেষ ২০২২-এর জুনের মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই এবং অধিগ্রহণের জন্য চিহ্নিত জমির প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয় তাদের। সর্বশেষ ১ বছরের সময় বৃদ্ধির অনুমতি দেওয়ার সময় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত সতর্কতাও দিয়ে দেয় পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ।

‘বিশদ নকশা প্রণয়ন ও দরপত্র দলির প্রস্তুতসহ ভাঙ্গা জংশন (ফরিদপুর) থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা (প্রথম সংশোধন) প্রকল্প’ শিরোনামে সর্বশেষ এই সময় বৃদ্ধির আবেদনে ২০২২-এর জুনের পর পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে আর কোনো সময় দেওয়া হবে না বলে উল্লেখ করে দেয় ভৌত অবকাঠামো বিভাগ। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই বরাদ্দ বৃদ্ধি না হওয়ার বিষয়টিও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় তাদের।

রেলওয়ে সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রথম প্রতিবেদনে ভাঙ্গা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত ১০টি স্টেশন স্থাপনের প্রস্তাব দেয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।

পরে অবশ্য ২৪ কিলোমিটার পথ বৃদ্ধি পেয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত লাইন যাওয়ার বিষয়টি যোগ হলে স্টেশনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১১টি। এসব স্টেশন হচ্ছে টেকেরহাট, মাদারীপুর, গৌরনদী, বরিশাল বিমানবন্দর, বরিশাল মহানগর, বাকেরগঞ্জ, পটুয়াখালী, আমতলী, পায়রা বিমানবন্দর, পায়রা বন্দর এবং সর্বশেষ কুয়াকাটা।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রথমে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন হওয়ার কথা থাকলেও পরে কুয়াকাটা পর্যন্ত বর্ধিত করা নিয়ে দেখা দেয় প্রথম জটিলতা। এ ছাড়া সমীক্ষা যাচাইয়ের প্রথম পর্যায়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান যে প্রস্তাবনা দাখিল করে তাতে অনেক ত্রুটিও ধরা পড়ে।

তারা যেভাবে প্রস্তাবনা দিয়েছিল তাতে পুরো পথে অনেক বাঁক এবং এতে করে অযাচিতভাবে রেললাইনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির পরিস্থিতি তৈরি হয়। মূলত এজন্যই নতুন করে সমীক্ষা করার জন্য বলা হয় তাদের।

সর্বশেষ যে প্রতিবেদন পেয়েছি তাতে ১শ মিটার প্রশস্ত ধরে ২১১ কিলোমিটার জমি অধিগ্রহণ করতে হবে আমাদের। এর মধ্যে রেলপথের দৈর্ঘ্য হবে ২০৫ কিলোমিটার।’

রেলওয়ের এডিজি (ইনফ্রাস্ট্রাকচার) কামরুল আহসান বলেন, ‘এটা ঠিক যে সমীক্ষা প্রতিবেদন পেতে খানিকটা দেরি হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত গত জুনে তা হাতে পেয়েছি। বর্তমানে চলছে ডিপিপি তৈরির কাজ। এরপর প্রস্তাবটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাব আমরা।

পরিকল্পনা কমিশন অনুমোদন দিলে এটি অন্তর্ভুক্ত হবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে। সেক্ষেত্রে কাজ শুরু হতে আর বাধা থাকবে না। ২০৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই পথে সিঙ্গেল লেন ব্রডগেজ লাইন বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।

প্রথম পর্যায়ে ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে জমি অধিগ্রহণের কাজ। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা তা হলো অর্থের সংস্থান। এত বড় একটি প্রকল্পের জন্য অবশ্যই আমাদের কোনো না কোনো দাতা দেশ কিংবা সংস্থার ওপর নির্ভর করতে হবে।

অর্থ সঙ্কুলানের বিষয়টি নিশ্চিত হলেই দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে বরিশালকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পাশাপাশি সমুদ্রবন্দর পায়রা এবং পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্থাপনের কাজ।’

রেলের কর্মকর্তারা এভাবে বললেও তাতে আস্থা পাচ্ছেন না রেললাইন বসাতে অধিগ্রহণের জন্য চিহ্নিত হওয়া জমির মালিকরা। গৌরনদী উপজেলার বাসিন্দা পঙ্কজ সাহা বলেন, ‘২০১৬ সালে সমীক্ষার কাজ শুরু হলে চীন, জাপানি সাহায্য সংস্থা জাইকাসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ ও দাতা সংস্থা এ প্রকল্পে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিল।

পত্রিকায় তা নিয়ে খবরও ছাপা হয়েছে। রেল বিভাগের গাফিলতি এবং দীর্ঘসূত্রতার কারণে এখন হয়তো তারা এই প্রকল্পে আর আগ্রহ দেখাচ্ছে না। মাঝে থেকে পড়েছি আমরা বিপদে। আমার জমির ওপর দিয়ে রেললাইন যাবে এ রকম দাগ চিহ্ন দিয়ে গেছে ৪ বছর আগে। কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।’

বরিশাল নগরের দক্ষিণ সাগরদী এলাকার বাসিন্দা দেওয়ান আবদুর রশিদ নিলু বলেন, ‘৫৮ শতাংশ জমির ওপর আমার বাড়ি। এর পুরোটাই লাগবে বলে চিহ্নিত করে দিয়ে গেছে রেলের লোকজন। সেই সঙ্গে বলে গেছে যে চিহ্নিত করা জমি বিক্রি, কিংবা এই জমির ওপর থাকা স্থাপনার কোনো পরিবর্তন-পরিবর্ধন ও সংস্কার করা যাবে না।

এ রকম পরিস্থিতিতে খুব জরুরি সংস্কারও করতে পারছি না আমরা। রেললাইনের জন্য জমি দিতে আমরা প্রস্তুত। এক্ষেত্রে কারও কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে সরকার আমাদেরকে স্পষ্ট করে কিছু বলুক। বছরের পর বছর এভাবে ঝুলিয়ে রাখলে তো চলবে না।’

বরিশালের জেলা প্রশাসক জসিমউদ্দিন হায়দার বলেন, ‘এটা তো কেবল বরিশাল নয়, ফরিদপুর, মাদারীপুর, পটুয়াখালী এবং বরগুনা জেলার বহু মানুষেরই সমস্যা। তবে আমি মনে করি এতবড় একটি উন্নয়ন প্রকল্প, যা এই অঞ্চলের মানুষের জন্যই হচ্ছে তার জন্য খানিকটা কষ্ট তো করতেই হবে।

যাদের জমি চিহ্নিত করা হয়েছে তারা প্রয়োজনে তাদের বাড়ির জরুরি সংস্কারের কাজগুলো অবশ্যই করতে পারবেন। এতে করে কোনো জটিলতা হবে বলে আমার মনে হয় না। তবে জমি ক্রয় বিক্রয় প্রশ্নে বোধকরি তাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আমি রেল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলব।’

একুশে বিডি ডটকম এর জন্য সারাদেশে সংবাদ দাতা নিয়োগ চলছে
যোগাযোগঃ- 01773411136,01778927878 ekusheybd2021@gmail.com

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন

Salat Times

    Dhaka, Bangladesh
    Thursday, 11th September, 2025
    SalatTime
    Fajr4:28 AM
    Sunrise5:44 AM
    Zuhr11:55 AM
    Asr3:22 PM
    Magrib6:05 PM
    Isha7:21 PM
© All rights reserved © 2019 ekusheybd.com
Theme Customized BY mrhostbd.com
themesba-lates1749691102