নড়াইলের দীঘলিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের বাড়িঘর পরিদর্শন করেছে বিএনপির প্রতিনিধি দল। শনিবার (২৩ জুলাই) দুপুরের দিকে ঐ এলাকা পরিদর্শনে যান একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা।
বিএনপির ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
এ সময় নিতাই রায় চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, এই জনপদের মানুষের মাঝে যে আতঙ্ক যে ভয় তৈরি হয়েছে তা আমরা নিজের চোখে দেখলাম। মানুষের এই দুর্দশায় বিএনপি অবশ্যই পাশে থাকবে। আমাদের প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় কীভাবে সহায়তা করবো সেটা আপনাদের জানিয়ে দেবো।
পরে ওই প্রতিনিধি দল বৃষ্টির বাধা উপেক্ষা করে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর পরিদর্শন করেন। প্রতিটা সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের প্রতি সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন নেতারা।
নিপূন রায় বলেন, সংখ্যালঘুরা নিজেদের সংখ্যালঘু মনে করার কারণে এক শ্রেণির বিপথগামী মানুষ সুবিধা নিয়ে অত্যাচার করছে। আমাদের সবাইকে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আর এই কাজ তারাই করে যারা এই অবৈধ সরকারের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে এই ধরনের নারকীয় ঘটনা ঘটাচ্ছে। আর ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা দেশজুড়ে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার করছে, তাদের বাড়িঘর ও সহায় সম্পত্তি দখল করছে। যেখানে স্বয়ং উপজেলা চেয়ারম্যান হিন্দু বাড়ি দখল করে, সেখানে সাধারণ মানুষ কার কাছে আশ্রয় চাইবে?
পরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পুত্রবধূ আরও বলেন, আমরা সরেজমিনে যা দেখলাম, তাতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, ক্ষমতাসীন দলের ইন্ধন আছে বলেই এই ঘটনা ঘটেছে। আর প্রশাসন ছিল একেবারেই নিষ্ক্রীয়।
সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, নড়াইলে মন্দির তছনছ হয়েছে। এ রকম ঘটনা এর আগে ঘটেছে কুমিল্লায়, নাসিরনগরে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, গাইবান্ধায়, পাবনাসহ আরও বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু এই সরকারের আমলে একটিও সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। যার ফলে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সংঘাতমূলক ঘটনা ঘটেই চলেছে। আমি বিশ্বাস করি ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। এই সরকার মনে করে হিন্দুরা দেশে থাকলে তাদের ভোট পাওয়া যাবে, আর পালিয়ে গেলে তাদের জমিটা কেড়ে নেওয়া যাবে। এখন যেহেতু তাদের ক্ষমতায় থাকতে ভোটের প্রয়োজন নেই, তাই জমি সোনা আর টাকার দিকে দৃষ্টি দিয়েছে সরকার।
উল্লেখ্য, গত ১৮ জুন নড়াইলে এক কলেজছাত্রের ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে দীঘলিয়া এলাকায় হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বেশ কযেকজনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে।