উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ার ফলে বিশ্বব্যাপী ক্রমেই বাড়ছে খাদ্য সংকট। এর জন্য সারের ঘাটতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবকে দায়ী করছে কানাডাভিত্তিক সংবাদ প্রতিষ্ঠান ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট। এদিকে, দুই দফা বন্যার কারণে চলতি বছর বাংলাদেশে সাড়ে ৩ লাখ টন চাল কম উৎপাদন হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন কৃষি বিষয়ক সংস্থা-ইউএসডিএ।
২০২০ সাল থেকে করোনার আঘাত এবং চলতি বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। যার প্রভাব পড়েছে জ্বালানি ও খাদ্যের দামে। ফলে দেশে দেশে এখন দেখা দিয়েছে কয়েক দশকের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি। আর ক্রমবর্ধ্মান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো বাড়িয়েছে ঋণের সুদের হার। এতে বিশ্বে লাগামহীনভাবে বাড়ছে ডলারের দর। সবমিলিয়ে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছে আমদানিনির্ভর, স্বল্পোন্নত এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো।
সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে বলে মনে করছে কানাডার ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট। সংস্থাটি বলছে, রাশিয়া বছরে মোট সাড়ে ১২ বিলিয়ন ডলারের নাইট্রোজেন ফসফরাস ও পটাশিয়াম সার রপ্তানি করতো। কিন্তু ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের কারণে সারের বৈশ্বিক চালান ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে পড়েছে সার আমদানিকারক দেশগুলো।
এদিকে, ২০২২-২৩ মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক উৎপাদন ২ শতাংশ কমে ২২৫ কোটি ২০ লাখ টনে হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইনস কাউন্সিল-আইজিসি। মূলত বিশ্বে গম ও ভুট্টার উৎপাদন কমার ফলে এমন আশঙ্কা তাদের। প্রতিবেদন বলছে, এশিয়া, ইউরোপ এবং লাতিন অ্যামেরিকার বিভিন্ন দেশের প্রচন্ড খরার কারণে মাটির আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় ব্যহত হচ্ছে গম, ভুট্টাসহ সব ধরনের খাদ্যশস্য উৎপাদন।
অন্যদিকে, দুই দফা বন্যায় বাংলাদেশে ধানের ক্ষতি হওয়ায় চলতি বছর চালের উৎপাদন কম হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন কৃষি বিষয়ক সংস্থা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের অর্থবছর ৩ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার টন উৎপাদন হলেও চলতি অর্থবছর তা ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৫০ হাজার টনে নেমে আসতে পারে। সবচেয়ে কমেছে আউশ ধানের আবাদ। ২৭ লাখ টন লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও উৎপাদন হয়েছে ২০ লাখ ৫০ হাজার টন। তবে বোরো এবং আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে ইউএসডিএ।