গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন। তিন দিনের তীব্র সংঘাতের পর রোববার (৭ আগস্ট) মিসরের দেয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে তেল আবিব। মিসরীয় একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে এএফপি। তবে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠী প্যালেস্টিনিয়ান ইসলামি জিহাদ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনা এখনও চলমান রয়েছে। খবর রয়টার্স ও এএফপির।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে একটানা বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। জবাবে প্যালেস্টিনিয়ান ইসলামি জিহাদ রকেট ছুড়ছে।
ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ শিশু ও চার নারীসহ অন্তত ৪১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩১১ জন। নিহতদের মধ্যে ইসলামিক জিহাদের একজন সিনিয়র কমান্ডারও রয়েছেন।
শুধু হতাহতই নয়, বিমান হামলায় গাজা উপত্যকার বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন মাটিতে মিশে গেছে। বিপরীতে গাজা থেকে ছোড়া রকেট হামলায় ইসরাইলের দুই নাগরিক আহত হয়েছে। এছাড়া কিছু ইসরাইলি তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদ হচ্ছে গাজা উপত্যকার দুটি প্রধান গোষ্ঠীর একটি। ক্ষমতাসীন হামাস গোষ্ঠীর এটি অপেক্ষাকৃত ছোট। গোষ্ঠীটি ইরানের থেকে সরাসরি আর্থিক ও সামরিক সমর্থন পায়।
গত বছর মে মাসে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। সেবারও মিসরের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ১১ দিন পর কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি। ওই যুদ্ধে শতাধিক নারী ও শিশুসহ ফিলিস্তিনের অন্তত ২৪০ জন নিহত হয়।
গত বছরের ন্যায় এবারও সংঘাত নিরশনে মধ্যস্থতা করছে মিসর। দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেছেন, সহিংসতার অবসানে মিসরীয় কর্মকর্তারা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
কায়রোর একটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, মিসরের দেয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন ইসরাইলি কর্মকর্তারা। এখন ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের জবাবের অপেক্ষায় আছে কায়রো।
এদিকে ইসলামিক জিহাদের একটি সূত্রে বলেছে, ‘যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে উচ্চস্তরে আলোচনা চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে সূত্রটি হুশিয়ারি দিয়েছে, দখলদার বাহিনীর (ইসরাইলি) আগ্রাসন ও অপরাধ যদি না থামে আমাদের প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে।’
রোববার ছিল সংঘাতের তৃতীয় দিন। এদিনও উভয় পক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে খবরে বলা হয়েছে। ইসলামিক জিহাদ জেরুজালেমের উদ্দেশে দুটি রকেট ছোড়ে। তবে রকেট দুটি গুলি করে ভূপাতিত করে ইসরাইলি বাহিনী। ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ‘গাজা উপত্যকায় ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীটির সামরিক শাখার সব সিনিয়র নেতাকে হত্যা করা হয়েছে।’
এদিকে গাজায় চলমান সহিংসতার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে রাশিয়া। চ্যানেল টুয়েলভ টেলিভিশন জানিয়েছে, ইসরাইলের বিমান হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মস্কো।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘাতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন, সহিংসতা বৃদ্ধি ঠেকানো ও অবিলম্বে টেকসই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে রাশিয়া।