চীনের পূর্বাঞ্চলে নতুন একটি প্রাণিবাহিত রোগ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ভাইরাসটি। এখন পর্যন্ত কয়েক ডজন মানুষের শরীরে এটি সংক্রমিত হয়েছে।
বুধবার (১০ আগস্ট) বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, হেনান ও শ্যানডং প্রদেশে ল্যাঙ্গা হেনিপাভাইরাস (LayV) বা ল্যাঙ্গা ভাইরাস আক্রান্ত ৩৫ জন রোগী পাওয়া গেছে। তাদের অনেকের জ্বর, অবসাদ ও কাশির মতো উপসর্গ দেখা গেছে। ২০১৮ সালে ভাইরাসটি শনাক্ত হলেও গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, কোনো প্রাণীর সংস্পর্শে আসার কারণে মানুষের শরীরে রোগটি ছড়িয়েছে। প্রথম দিকে ছুঁচোর (ইঁদুরজাতীয় প্রাণী) শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত করেন বিজ্ঞানীরা।
চীন, সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীদের লেখা একটি চিঠিতে এ ভাইরাস আবিষ্কারের বিষয়টিতে জোরালো আলোকপাত করা হয়েছে। চলতি মাসে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন সাময়িকীতে চিঠিটি প্রকাশ করা হয়।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক ডিউক-এনইউএস মেডিকেল স্কুলের গবেষক ওয়াং লিনফা বলেন, এ পর্যন্ত যেসব ল্যাঙ্গা ভাইরাস রোগী পাওয়া গেছে, তাদের অবস্থা গুরুতর নয়। এমনকি রোগটি তাদের জন্য প্রাণঘাতীও নয়। কাজেই রোগটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, তবে সবাইকে ভাইরাসটি নিয়ে সতর্ক হতে হবে। প্রকৃতিতে যেসব ভাইরাস আছে, তা মানুষে সংক্রমিত হলে খারাপ ফল আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পরীক্ষা করা ২৭ শতাংশ ছুঁচোর শরীরে ল্যাঙ্গা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ছুঁচোর মতো স্তন্যপায়ী হচ্ছে ল্যাঙ্গা ভাইরাসের প্রাকৃতিক আধার। এছাড়া প্রায় পাঁচ শতাংশ কুকুর ও দুই শতাংশ ছাগলের শরীরে ভাইরাসটি পজিটিভ এসেছে। তাইওয়ানের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ল্যাঙ্গা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ওপর গভীর নজর দেয়া হচ্ছে।
করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর প্রাণিবাহিত রোগ নিয়ে বিজ্ঞানীদের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র জানিয়েছে, নতুন কিংবা আসন্ন চারটির মধ্যে তিনটি রোগ প্রাণিবাহিত।