করোনা মহামারির বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে জয় ঘোষণা করেছে উত্তর কোরিয়া। টানা দুই সপ্তাহ ধরে নতুন কোনো করোনা রোগী শনাক্ত না হওয়ায় দেশকে করোনামুক্ত ঘোষণা করেছেন সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। দেশের এমন সাফল্যকে ঐতিহাসিক বলেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আবারও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। ভারতে কোভিডের চতুর্থ ঢেউ আঘাত হেনেছে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া ও জাপানেও বেড়েছে আক্রান্তের হার।
করোনা মহামারি শুরুর পর থেকেই ভাইরাসটির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে পুরো বিশ্ব। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয় বিভিন্ন দেশের সরকার। আক্রান্তের সংখ্যা নিয়মিতই প্রকাশ করে দেশগুলোর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
তবে বরাবরই উল্টো পথে ছিল উত্তর কোরিয়া। করোনা আক্রান্ত রোগি ও মৃতের সংখ্যা গোপনের অভিযোগ ওঠে দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে। তবে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন করোনা মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের ঘোষণা দিয়েছেন।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানায়, দেশটির স্বাস্থ্যকর্মী ও বিজ্ঞানীদের সঙ্গে এক বৈঠকে করোনার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধ জয়ের ঘোষণা দেন কিম। দুই সপ্তাহ ধরে দেশটিতে নতুন কোন করোনা রোগী শনাক্ত না হওয়ায় এ ঘোষণা দেন তিনি।
কিম বলেন, ‘আমাদের জনগণের অর্জিত বিজয় এটি। একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। জনগণ বিশ্বকে দেখিয়েছে আমাদের রাষ্ট্রের মহিমা।’ তিনি আরও বলেন, ‘সবাইকে খুবই সাবধানে থাকতে হবে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় কড়া নজর রাখতে হবে। কারণ, এখনো বিশ্বে মাঙ্কিপক্স হচ্ছে, করোনাও ছড়াচ্ছে।’
কিম জং উনের এমন ঘোষণায় চলছে আলোচনা সমালোচনা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহামারি শুরুর পর অর্থনৈতিক দুর্দশা ঢাকতে ও দেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে শুরু থেকেই তথ্য গোপন করেছেন কিম।
এদিকে বৃহস্পতিবার কিম জং উনের বোন দাবি করেন, উত্তর কোরিয়ায় করোনার প্রাদুর্ভাবের পরই জ্বরে আক্রান্ত হন কিম। যদিও সেসময় তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কিনা তা জানা যায়নি।
উত্তর কোরিয়া যখন করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের ঘোষণা দিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করছে ঠিক তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আবারও বাড়ছে সংক্রমণ। এরইমধ্যে ভারতে করোনার চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার দেশটিতে ১৬ হাজারের বেশি কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালেও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। সাধারণ মানুষ মাস্ক পরা কমিয়ে দেয়ায় এবং সামাজিক দূরত্ব না মানায় সংক্রমণ বাড়ছে বলে মনে করছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া ও জাপানেও বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবার জাপানে আড়াই লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হন। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশটির হাসপাতালগুলোতে অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।