ছবি: সংগৃহীত

প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে কোয়ান্টিকোতে অভিনয় করেছেন অ্যান হেচ। শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না তাকে। সড়ক দুর্ঘটনার পর কোমায় থেকে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

লস অ্যাঞ্জেলেসের হাসপাতালে প্রয়াত হলেন হলিউড অভিনেত্রী অ্যান হেশ। তার শেষ ইচ্ছায় অঙ্গদানের ব্যবস্থা চলছে। শোকস্তব্ধ ছেলে বলেন, ‘আমার ভাই অ্যাটলাস এবং আমি আমাদের মাকে হারিয়েছি। প্রায় অবিশ্বাস্য মানসিক দোলাচলের ছয় দিন পর আমি একটি গভীর, শব্দহীন দুঃখে রয়ে গেলাম। আশা করি আমার মা ব্যথা থেকে মুক্ত।’ পরিবারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ‘আমরা আমাদের উজ্জ্বল আলোটুকু হারিয়ে ফেললাম। তিনি যেমন দয়ালু, হাসিখুশি, সৎ বন্ধু ছিলেন, তেমনি ছিলেন একজন স্নেহময়ী মা। উদাহরণ হিসেবে রেখে গেলেন কাজের প্রতি তার নিষ্ঠা, এত দিনের অভিনয়জীবনের ঔজ্জ্বল্য, আর তার ছেলেদের। এসবের মধ্যেই বেঁচে থাকবেন অ্যান।’

গত শুক্রবার ঘটেছিল সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মাদক সেবন করে ক্যালিফোর্নিয়ার শহর সীমান্তে গাড়ি চালাচ্ছিলেন ‘দ্য ব্রেভ’ অভিনেত্রী। তার নীল ছোট কুপার একটি বাড়িতে গিয়ে ধাক্কা মারে। তারপরই বিস্ফোরণ। আগুন জ্বলে ওঠে গাড়িতে। নিমেষে ঝলসে যান ৫৩ বছরের অ্যান। এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী, দুর্ঘটনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাকে গাড়ি থেকে বের করে আনা হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেকটাই জ্বলে গিয়েছিল তার শরীর।

এত দিনের যুদ্ধে হারই হলো চিকিৎসকদের। মাথায় প্রবল আঘাত লেগেছিল। চিকিৎসার পরও মস্তিষ্ক সাড়া দিচ্ছিল না অ্যানের। আইনত তাকে মৃত ঘোষণা করে লস অ্যাঞ্জেলেসের হাসপাতাল। কিন্তু হৃদ্‌স্পন্দন থামেনি তার। ভেন্টিলেশনে তার শ্বাসক্রিয়া চালু রাখা হয়েছে। জানা যায়, অভিনেত্রীর ইচ্ছে ছিল, মরণোত্তর দেহ এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করবেন। সেই ইচ্ছা পূরণের জন্যই তার দেহে রক্ত সঞ্চালনের চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা। সেই কাজ শেষ হলে ভেন্টিলেশন খুলে নেয়া হবে।

খুব ছোট বয়সে অভিনয়ে এসেছিলেন অ্যান। টেলিভিশনে বিভিন্ন ধারাবাহিকে অভিনয় করে ক্যারিয়ার শুরু করেন। ‘অ্যানাদার ওয়ার্ল্ড’ টেলিভিশন সিরিজের মাধ্যমে দর্শকের নজর কাড়েন। সেখানে তাকে দেখা গিয়েছিল দ্বৈত চরিত্রে। এ ছাড়াও ‘কোয়ান্টিকো’তে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সহ-অভিনেত্রী হিসেবেও তাকে দেখেছেন দর্শক। অভিনয় করেছেন অসংখ্য ছবিতে।
ওয়েস্ট হিল হাসপাতালের গ্রসম্যান বার্ন সেন্টারে চিকিৎসারত এ অভিনেত্রীর বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছে তার পরিবার। হেচের পরিবারের সদস্যরা মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘অ্যানের সেরে ওঠার জন্য সবাই যেভাবে প্রার্থনা করেছেন, সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। হেচের খুব ইচ্ছা ছিল তার মৃত্যুর পর মরণোত্তর অঙ্গদানের।’

সূত্র: সিএনএন