কদিন আগেও খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া কিছু পদক্ষেপের ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। রোববার (১৪ আগস্ট) খোলাবাজারে ডলারের দাম পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বর্তমানে কার্ব মার্কেটে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১২-১১৪ টাকায়।
ডলারের সংকট কমাতে ও দাম সামলাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া নানামুখী পদক্ষেপের মধ্যে বিলাসী পণ্যসহ সার্বিক আমদানিতে নানা শর্ত আরোপের সুফল আসতে শুরু করেছে বাজারে। কমেছে আমদানির এলসি (লেটার অব ক্রেডিট–ঋণপত্র) খোলার পরিমাণ, এতে চাপ কমেছে ডলারের বাজারে, ফিরতে শুরু করেছে টাকার মান।
রোববার (১৪ আগস্ট) মতিঝিলের কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে তারা ১১০-১১১ টাকা দরে ডলার কিনছে এবং বিক্রি করছে ১১২-১১৪ টাকা দরে। তবে ডলার ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম কমায় বলা যাবে না বাজার স্থিতিশীল হয়েছে। যতদিন-না টাকার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাড়ছে, বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত ডলারের বাজার দোদুল্যমান থাকার শঙ্কা করেছেন ব্যবসায়ীরা।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট কেন্দ্র করে সারা বিশ্বে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ডলারের বাজারে। একদিকে দেশের রিজার্ভ কমে যাওয়া, অন্যদিকে রফতানির বিপরীতে আমদানি বেড়ে যাওয়ায় টাকার মানের অবমূল্যায়ন হতে শুরু করে, দেদার বাড়তে থাকে ডলারের দাম।
এদিকে রফতানির বিপরীতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে মারাত্মক ডলার সংকট। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আমদানিতে কড়া শর্তারোপের ফলে কমে এসেছে আমদানি ব্যয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, আগস্ট মাসের ১১ দিনে দেশে মোট ১৬১ কোটি ডলারের সমপরিমাণ মূল্যের আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা জুলাই মাসের তুলনায় ৯৪ কোটি ডলার বা ৩৬ শতাংশ কম। জুলাই মাসে আমদানি হয়েছিল ২৫৫ কোটি ডলার।
এদিকে গত মাস থেকেই বাড়তে শুরু করেছে আগত রেমিট্যান্সের পরিমাণ। ধারণা করা হচ্ছে, এভাবে রেমিট্যান্সের ধারা অব্যাহত থাকলে ধীরে ধীরে সংকটকালীন অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে আসবে। সবশেষ হিসাব অনুযায়ী (১২ আগস্ট পর্যন্ত), বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ৩৯ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার, যা দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।