শেখ হাসিনাকে রক্ষায় অনেক নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক নেতাকর্মী পাশে দাঁড়িয়েছেন। এর জন্য শেখ হাসিনা জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নে এতদূর পর্যন্ত যেতে পেরেছেন।
নাছিম বলেন, ‘আগামী দিনে আমাদের সাহসী ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সবসময় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পাশে আমাদের থাকতে হবে। যারা জাতির পিতার হত্যাকারীদের পাশে দাঁড়াবে, খুনিদের মতো কথা বলবে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলছে এবং সামনেও চলবে। তাদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’
রোববার (১৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব স্মরণে আলোচনা সভা ও বঙ্গবন্ধু বইমেলায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে। জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নে প্রয়োজনে আমরা নিজেদের বুক পেতে দেব, তারপরও আমরা খুনিদের সামনে আসতে দেব না। তাদের সামনে মাথা নত করব না।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘জাতির পিতাকে যারা হত্যা করেছে, খুনি জিয়াউর রহমান তাদের রক্ষা করেছেন। তাদের রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসিয়েছেন। আইন জারি করে খুনিদের রক্ষা করে গোটা জাতিকে অসম্মান করেছে বিএনপি-জামায়াত। তারা অপশক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর লক্ষ্য নিয়ে আমাদের নেতাকে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা চলছে সবসময়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যখন দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন তারা দেশকে শ্রীলঙ্কা করার চিন্তা করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। মানুষকে উসকে দিয়ে নতুন করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। তারা কখনো দেশের ভালো চায় না। তারা সবসময় দেশের ক্ষতি চায়। হাওয়া ভবনের কর্ণধার এখন বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে এবং তার সহযোগীরা সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে নানা ফাঁদ তৈরি করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা এখনো তাদের হত্যার রাজনীতির নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। তারা কখনো চায় না দেশ উন্নত হোক। তারা সবসময় মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় যেতে চায়। তাদের শুধু একটাই নেশা–কীভাবে ক্ষমতায় যাবে। তারা হরতাল-অবরোধের নাম দিয়ে পেট্রোলবোমা মেরে বহু মানুষকে হত্যা করেছে। ’৭৫-এর খুনিদের রক্তের নেশা এখনো শেষ হয়নি। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা অনেক খুনির বিচার করেছেন। কেউ কেউ এখনও পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের ধরে এনে ফাঁসি দিতে হবে। এটা আমাদের দাবি নয়, এটা আমাদের অধিকার।’
ছাত্রলীগকে উদ্দেশ করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত যাতে কোনো ষড়যন্ত্র করতে না পারে, সে জন্য আপনাদের (ছাত্রলীগ) ঐক্যবদ্ধভাবে অতীতের ন্যায় বলিষ্ঠ ভূমিকায় থাকতে হবে। রাজপথে থেকে সব সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। বিএনপি-জামায়াত যেন দেশে আর কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে এবং কোথাও ষড়যন্ত্র হলে তা শক্ত হাতে রাজপথে নেমে প্রতিহত করতে হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতির পিতার আদর্শের সংগঠন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হলো জাতির পিতার আদর্শকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংগঠন।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা আর কাউকে হারাতে চাই না। আমরা জাতির পিতাকে হারিয়েছি, কিন্তু তার আদর্শ আমরা হারাইনি। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে আমরা মানুষের কাছে গেলে মানুষ আমাদের সমর্থন করবে, দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে সমর্থন করবে। আগামী সংসদ নির্বাচনে দেশের জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবার নির্বাচিত করবে এবং জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করবে–এটাই আমাদের আগস্টের একমাত্র প্রত্যয়।’
সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক জুয়েল মোড়লের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে বিশেষ ছিলেন সরকারি তিতুমীর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম বাছেক, ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. নাছির, তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাজী মিরাজুল ইসলাম ডলার, আমজাদ হোসেন আমজাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মানিক হোসেন প্রমুখ।