চলতি বছর তীব্র দাবদাহ, অনাবৃষ্টি ও ভূগর্ভস্থ পানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় জ্বালানি পরিবহনে ব্যবহৃত ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ একটি নদীপথে নৌচলাচল সীমিত হয়ে পড়ায় জার্মানিতে বিদ্যুতের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে জানান দেশটির জ্বালানি খাতের সংশ্লিষ্টরা। তবে সামনের ঠান্ডা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে বলছে শলজ সরকার।
কথায় আছে, যায় দিন ভালো আসে দিন খারাপ। জ্বালানি সংকটে অস্থির জার্মানি যেন এমন এক বাস্তবতার মুখোমুখি। একদিকে রাশিয়া থেকে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ, তার ওপর গ্রীষ্মের এই উত্তাপে ইউরোপের জ্বালানি শক্তির ওপর প্রচণ্ড চাপ সংকট আরও গভীর করেছে।
এই চাপ শুধু জার্মানিতে নয়, পুরো ইউরোপের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত আয়ে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। তবে আসছে শীতে জ্বালানির চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সংকট আরও তীব্র হবে বলেও আগাম সতর্কবাণী দিয়ে রেখেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ। তিনি বলেন, যেখানে প্রয়োজন নেই, সেখানে জ্বালানি শক্তির অপচয় যেন রোধ করা হয়।
গ্যাস বাঁচাতে সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের দেশগুলোকে কয়লার ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। তবে জার্মানির রাইনসহ গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোতে পানি কমে যাওয়ায় নৌপথে কয়লা পরিবহনও বন্ধ হওয়ার পথে।
এরই মধ্যে ইউরোপিয়ান এনার্জি এক্সচেঞ্জে জার্মানির আগামী বছরের প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুতের দাম ৩ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ৪২০ ইউরোতে পৌঁছানোর আভাস পাওয়া যাচ্ছে, যা আগের দামের তুলনায় ৫ গুণ বেশি।
এদিকে জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনও। তাই বিদ্যুতের জন্য দেশগুলোর জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর কেন্দ্রের ওপর নির্ভরতাও বেড়েছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
এ অবস্থায় জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো দেশে পুরোনো পরমাণু শক্তিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আবারও চালু না করলে সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।