তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান ছিলেন ঠান্ডা মাথার খুনি। সকালবেলা নাশতা করতে করতে ফাঁসির আদেশে সই করতেন, এটি তার এডিসির বক্তব্য। একসঙ্গে ২১টি ফাঁসির আদেশে সই করেছেন কোনও কোনও দিন। এমনও ঘটেছে ফাঁসি হয়ে গেছে, রায় হয়েছে ফাঁসির তিন মাস পর। আইনের কোনও যুক্তি শোনা হতো না।
তিনি বলেন, ‘১৯৭৭ সালে হত্যার শিকার বিমান ও সেনাবাহিনীর অফিসারদের স্বজনদের বোবা-কান্না, বিএনপি ও জিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে বিশ্বের কাছে তুলে ধরবো আমরা। যারা মানবাধিকারের কথা বলে দেশে প্রপাগান্ডা ছড়ায় তাদের স্বরূপ উন্মোচন করবো।’
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের গুম-খুনের রাজনীতির কালো অধ্যায় নিয়ে দীপ্ত টেলিভিশন নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘গণফাঁসি ৭৭’ প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে মানবাধিকারের কথা বলে নয়াপল্টনের অফিস এবং প্রেসক্লাবের সামনে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা বক্তৃতা করেন। ৪৫ বছর ধরে জিয়াউর রহমানের নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার পরিবারগুলোর কান্নার জবাব বিএনপি নেতাদের কাছে চাই। এই পরিবারগুলোর যে কান্না সেটির জবাব, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাব বিএনপি নেতাদের কাছে চাই।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কুশীলব জিয়াউর রহমান। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য সেনাবাহিনীর কয়েক হাজার অফিসার এবং জওয়ানকে হত্যা করেছেন। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম-খুন করেছেন, কারাগারে নিক্ষেপ করেছেন। দিনের পর দিন মার্শাল ল দিয়ে দেশ শাসন করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে হত্যার যে দৃশ্য তা দেখার নয়, রাজনীতির নামে বিএনপি এমন নৃশংসতা চালিয়েছে। এসবের জন্য খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা দায়ী। এসব কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়? আজকে তারা মানবাধিকারের কথা বলে। চট্টগ্রামের নেতা মৌলভী সৈয়দ জিয়ার হাতে খুন হয়েছেন।’
জিয়াউর রহমানের চেয়ে তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও কম যাননি উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২১ আগস্ট ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে জননেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছেন খালেদা। জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং পুরো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে হত্যা করার অপচেষ্টা করেছেন। ২২ জন নেতাকর্মীসহ ২৪ জন নিহত হলেন। ৫০০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমি নিজেও সেদিন আহত হয়েছিলাম। আমার শরীরে এখনও ৪০টি স্প্রিন্টার আছে। এ ঘটনার পর আমাদের নেতাকর্মীরা যাতে আহতদের সাহায্য করতে না পারে, সেজন্য পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে। আলামত হিসেবে গ্রেনেড সংরক্ষণ করার অপরাধে তৎকালীন সেনাবাহিনীর অফিসার মেজর শামসসহ কয়েকজনকে চাকুরিচ্যুত করেছে। এসব ছিল খালেদা জিয়ার নৃশংসতা।