কার্বন নিরপেক্ষ বিশ্বকাপ উপহার দিতে চায় কাতার
কার্বননিরপেক্ষ বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ। এমন দাবি আয়োজক দেশটি শুরু থেকে করে এলেও তা মানতে নারাজ পরিবেশবিদরা। কারণ, বিশ্বকাপ চলাকালে বিপুলসংখ্যক পর্যটক দেশটিতে যাবেন। ফলে এয়ারলাইনসগুলোর ব্যস্ততা বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে যানজটও। এদিকে, অন্যান্য হোটেলের তুলনায় দুবাইয়ের হোটেলগুলোর চাহিদা বেশি বলে দাবি হোটেল কর্তৃপক্ষের।
দরজায় কড়া নাড়ছে কাতার বিশ্বকাপ। আর তিন মাসও বাকি নেই মরুর বুকে প্রথমবার ঝড় তুলতে যাওয়া ফুটবল মহাযজ্ঞের। দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে কোনো কমতি রাখেনি কাতার। স্টেডিয়াম, হোটেল-মোটেল থেকে শুরু করে শপিং মল, কী নির্মাণ করেনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। বিশ্বকাপ উপলক্ষে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতেই তাদের এ প্রয়াস।
গেল বছর আয়োজক দেশটি দাবি করেছিল, এবার কাতার বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে কার্বননিরপেক্ষ। যেখানে দেশটির বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, গেল বছরের তুলনায় কাতারে এ বছর পর্যটক বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যাবে এয়ারলাইনসগুলোর যাত্রা শিডিউল। বেড়ে যাবে যানজটও। যার প্রভাব পড়বে পরিবেশেও। তাই পরিবেশবিদদের মতে, কাতার বিশ্বকাপ কখনোই হতে পারে না পরিবেশবান্ধব।”
দুবাই বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী পল গ্রিফিথস বলেন, ‘বিশ্বকাপের সময় অনেক বেশি পর্যটক আসবে দুবাইয়ে। আমাদের জনপ্রিয় এয়ারলাইনসগুলো যেহেতু তারা ব্যবহার করবে; তাই আশা করছি, এ সময়ে ফ্লাই দুবাই, কাতার এয়ারওয়েজ ও উইজ এয়ারের মতো এয়ারলাইনসগুলোর শিডিউল অনেক বেশি ব্যস্ত থাকবে। তবে, একটা বিষয় ঠিক যে, বিশ্বকাপের সময় যেমন ব্যস্ততা বাড়বে আমাদের, তেমনি ট্রাফিকও বেড়ে যাবে।’
কাতার বিশ্বকাপ কার্বননিরপেক্ষ হবে–এমনটা ভাবতে নারাজ পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসও। সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক জুলিয়েন রেইসাতি বলেন, ‘আপনাকে একেবারে শুরুতে যেতে হবে, যখন কাতারে বিশ্বকাপ উপলক্ষে নির্মাণ ও অবকাঠামোগত কাজ করা হয়েছে। এখন আসলে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বিশ্বকাপ একেবারে কার্বনমুক্ত হবে–ব্যাপারটা ভুল। এমন দাবি তারা কোনোভাবেই করতে পারে না।’
মার্চের সমীক্ষা অনুযায়ী কাতারজুড়ে আছে ৩০ হাজার হোটেল রুম। কিন্তু পর্যটকের সংখ্যা তার থেকেও অনেক বেশি। এ অবস্থায় দুবাইয়ের হোটেলগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তারাই পাচ্ছেন যারা কিনা আগে বুকিং দিয়ে রাখছেন। রোভ হোটেলের চিফ অপারেটিং অফিসার পল ব্রিজার বলেন, ‘বিশ্বকাপের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের হোটেলে অনেক পরিবর্তন আনতে হয়েছে। ২০১৯-এর চেয়ে ৩০০ শতাংশের বেশি অগ্রিম বুকিং হয়েছে। বেশির ভাগ পর্যটকই অগ্রিম বুক করে রেখেছেন।’
বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতারে পর্যটকের সংখ্যা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা আয়োজক দেশটির।