এবারের এশিয়া কাপে ফেবারিটের তালিকায় ছিল না শ্রীলঙ্কা। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই তারা হেরে যায় আফগানদের কাছে। সেই লঙ্কানরাই কিনা এবার এশিয়া কাপের ফাইনালে। যাদের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। যারা প্রথম ম্যাচে হেরেছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে।
এবারের এশিয়া কাপের ফাইনাল ভারত-পাকিস্তান হবে, এমনটাই বাজি ধরেছিল অনেকে। এশিয়া কাপের ফাইনালে ক্রিকেটের ‘এল ক্লাসিকো’ হবে এমনটা প্রত্যাশা করলেও তা হচ্ছে না। সবাইকে অনেকটা অবাক করেই এবারের এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে লঙ্কানরা। তবে তাদের শুরুটাও ভালো হয়নি।
আন্ডারডগ হিসেবে আসর শুরু করা দলটি একের পর এক ভূমিকম্প ঘটিয়ে এখন শিরোপার স্বপ্ন দেখছে। গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচে হারলেও বাংলাদেশকে নাটকীয় ম্যাচে হারিয়ে সুপার ফোরে ওঠে শানাকার দল। এরপর আর কোনো ম্যাচ হারেনি তারা।
সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে আফগানদের ৪ উইকেটে হারিয়ে গ্রুপ পর্বে হারের প্রতিশোধ নেয়। এরপর লঙ্কানরা ভারতকে হারিয়ে দেয় ৬ উইকেটে। এরপর সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপদেশটি পাকিস্তানকে হারায় ৫ উইকেটে।
অপরদিকে টুর্নামেন্টের শুরুটা হার দিয়ে করলেও সুপার ফোরে উঠে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। গ্রুপ পর্বে ভারতের কাছে ৫ উইকেটে হার দিয়ে শুরু পাকিস্তানের এবারের এশিয়া কাপ মিশন। এরপর অবশ্য হংকংকে ১৫৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারায় তারা। আর সুপার ফোরে ভারত ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় পাওয়ার পর ফাইনাল নিশ্চিত করে বাবর আজমের দল। যদিও শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হেরে যায় তারা।
এদিকে এশিয়া কাপের দ্বিতীয় সফলতম দল শ্রীলঙ্কা। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরে আজ তাদের সামনে ষষ্ঠ শিরোপার হাতছানি। অন্যদিকে পাকিস্তান এশিয়া কাপ জিতেছে মাত্র দুবার। ফাইনালে উঠেছে ১০ বছর পর। কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটে গত কয়েক বছরে পাকিস্তান যতটা এগিয়েছে, ততটাই পিছিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এ জন্যই বলা হচ্ছে, এবারের এশিয়া কাপে পুনর্জন্ম হয়েছে লঙ্কান ক্রিকেটের।
এবারের এশিয়া কাপে দুই দলের ব্যাটিং ও বোলিং ছিল দুর্দান্ত। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন-আপে অন্যতম ভরসার নাম ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান। এ পর্যন্ত ৫ ম্যাচের ৫ ইনিংসে ২টি হাফ-সেঞ্চুরিসহ টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২৬ রান করেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
আর শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের দুই অন্যতম ভরসার নাম পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশাল মেন্ডিস। দলকে দারুণ সূচনা এনে দিচ্ছেন এই দুই ওপেনার। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪৫, সুপার ফোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬২, ভারতের বিপক্ষে ৯৭ রানের সূচনা এনে দেন নিশাঙ্কা ও কুশাল জুটি। তাই ফাইনাল মঞ্চে নিশাঙ্কা ও কুশালের জুটিতে আরও একটি দুর্দান্ত শুরু আশা করতেই পারে শ্রীলঙ্কা। ভানুকা রাজাপাকসেও হতে পারেন শ্রীলঙ্কার উদ্ধারকারী। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এ ব্যাটারের স্ট্রাইক রেট ১৩৭.০৩।
এদিকে বল হাতে এবারের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি স্পিনার মোহাম্মদ নেওয়াজ। ৫ ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার সেরা বোলার হিসেবেই এবারের এশিয়া কাপ শুরু করেছিলেন হাসারাঙ্গা। যদিও এখন পর্যন্ত খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। প্রথম চার ম্যাচে মাত্র ৩ উইকেট নিয়েছেন হাসারাঙ্গা। তবে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে পুরনো হাসারাঙ্গাকে দেখা গেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে দলের জয়ে ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন এই লেগ স্পিনার।