সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম এখন থেকে চলবে বছরের প্রথম তিনমাস, জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়ের মধ্যে। ওই সময়ে একই উপজেলা বা থানা, আন্তঃউপজেলা বা থানা, আন্তঃজেলা ও আন্তঃবিভাগে বদলি করা হবে শিক্ষকদের। তবে কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে বছরের অন্য সময়েও বদলি করা যাবে। এ বদলির জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদন শুরু হবে।
প্রাথমিকে শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের অনলাইনে বদলির নির্দেশনা জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত ‘সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা-২০২২’ এ এসব নির্দেশনা দেয়া হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষায় সংশ্লিষ্ট কোনো শিক্ষক-কর্মচারী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে বা শৃঙ্খলাজনিত কারণে সরাসরি বদলি করা যাবে না। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় উপপরিচালকরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশাসনিক বদলির জন্য মহাপরিচালক বরাবর সুপারিশ পাঠাবেন। প্রশাসনিক বদলির ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের তুলনামূলক সুগম কর্মস্থলে না দেয়ার বিষয়ে নির্দেশিকায় জানানো হয়।
এছাড়া, নতুন কর্মস্থলে তাদের দুই বছর চাকরিকালও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া তিন বছরের আগে অভিযুক্তরা পুনরায় বদলির আবেদন করতে পারবেন না।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীরা প্রতিবছর জানুয়ারি ও জুলাই মাসে বদলির আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতর প্রয়োজনে যে কোনো সময় বদলি করার অধিকার রাখে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকদের প্রতিবছর জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে একই উপজেলা বা থানা, আন্তঃউপজেলা বা থানা, আন্তঃজেলা ও আন্তঃবিভাগে বদলি করা যাবে। তবে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে অন্য সময়েও বদলি করা যাবে।
বদলির শর্তাবলিতে দেখা গেছে, যেসব বিদ্যালয়ে চারজন অথবা তার কম শিক্ষক রয়েছেন, সেসব বিদ্যালয় থেকে সাধারণভাবে বদলি করা যাবে না। প্রতিষ্ঠানে ৪০ বা তার বেশি শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন শিক্ষক থাকলেও তাদের বদলি করা হবে না।
সহকারী শিক্ষক পদে ন্যূনতম দুই বছর পূর্ণ হলে অথবা শূন্য পদ সাপেক্ষে আন্তঃবিভাগীয় পর্যায় পর্যন্ত বদলি করা যাবে। তবে বদলির পর তিন বছর অতিক্রান্ত না হলে পুনঃবদলির আবেদন বিবেচিত হবে না। এমনকি পদোন্নতি পেলেও একই শর্ত প্রযোজ্য হবে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নদী ভাঙনসহ বিভিন্ন কারণে স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন হলে বা শূন্য পদ থাকলে নিজ স্থানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বদলির আবেদন বিবেচনা করা হবে। বদলি আবেদনের ক্ষেত্রে দূরত্ব, লিঙ্গ, চাকরির জেষ্ঠ্যতা, প্রতিবন্ধকতা, বিবাহ, বিচ্ছেদ এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হবে। চাকরি জীবনে বিবাহ ও বিচ্ছেদজনিত কারণে একবার করে স্থায়ী ঠিকানায় বদলির অগ্রাধিকার দেয়া হবে। শূন্য পদ সাপেক্ষে উপজেলার মোট পদের ১০ শতাংশ বাইরে থেকে বদলি করা যাবে।