সামান্য বৃষ্টিতেই নাকাল রাজধানীবাসী। তার ওপর টানা দুইদিন বৃষ্টি। এতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় ভোগান্তি বেড়েছে দ্বিগুণ। ঢাকা ছাড়াও টানা বর্ষণে দেশের বিভিন্ন জেলায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জীবিকার তাগিদে বৃষ্টির মধ্যেই রাস্তায় বের হন রাজধানীবাসী। স্কুল ও অফিসগামী মানুষের চাপে সড়কে তৈরি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। বৃষ্টির কারণে সময় মতো মেলেনি অফিসগামী পরিবহন। ফলে রিকশা কিংবা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাড়তি ভাড়া গুণেও সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি অনেকেই।
বৃষ্টিতে ভিজে অল্পতেই কাহিল রিকশা চালকরা। ক্রেতার অভাবে বিক্রি কম হওয়ায় হতাশ ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতারাও।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, কয়েকদিনে বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হয়ে স্থলভাগে উঠে এলেও কমেনি উপকূলে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা। বৈরী আবহাওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। সমুদ্রবন্দরগুলোতে এখনও তিন নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে না যেতে বারবার মাইকিং করা হলেও মানছেন না তারা। আর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই মাছ শিকারে জেলেরা ছুটছেন গভীর সমুদ্রে।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতেও স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি কয়েক ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নচাপের প্রভাবে আরও কয়েকদিন বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করবে বলে জানিয়েছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।
এছাড়া, টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোর পানি বেড়েই চলেছে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে বরগুনার বালেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ঘাট-মাঠ পানিতে একাকার।
বৈরী আবহাওয়ায় মোংলা বন্দর ও পশুর নদীর দুই পাড়ে কয়েকশ’ পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ ও ট্যুরিস্ট বোট নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।
গত ৩ দিন ধরে কখনো মুষলধারে আবার কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে থেমে গেছে ঝিনাইদহে মানুষের স্বাভাবিক কার্যক্রম। তবে বৃষ্টিতে আশায় বুক বেঁধেছেন আমন চাষিরা।
ভাদ্রের শেষে টানা বৃষ্টিতে বগুড়া শহরের রাস্তাগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। হাঁটু সমান পানি ভেঙে চলাচল করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এছাড়াও বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে বাগেরহাট সদর উপজেলার তিনটি গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের উপপরিচালক ছানাউল হক জানান, বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরের আগে বৃষ্টি পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হবে না। সাগর উত্তাল থাকায় নৌযানগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে। বজ্রপাত থেকে বাঁচতে চলাচলের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আর বৃষ্টিপাত শেষ হওয়ার পর ভ্যাপসা গরম অনুভূত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।