বনানী কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ৯টায় বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের দাফন সস্পন্ন হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবীর খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
দাফনের সময় শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে শাহ ইফতিখার হোসেন রানার বউ, মেয়ে মনজুরা কবির হোসেন রিমি, রেহনুমা আফরিন দিনা ও মেয়ে জামাই মোয়াজ্জেম হোসেন অপু, বিএনপি মিডিয়া সেল সদস্য শায়রুল কবীর খান, একান্ত সচিব এইচ এম সাইফ আলী খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর পৌনে ১২টায় মোয়াজ্জেম হোসেনের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বাদ জোহর জন্মভূমি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় জানাজা এবং বাদ এশা গুলশান আজাদ মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় গুলশানে নিজ বাসায় ৮৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন শাহ মোয়াজ্জেম।
প্রবীণ রাজনীতিক শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ১৯৩৯ সালের ১০ জানুয়ারি মুন্সিগঞ্জ জেলার দোগাছি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক।
শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ১৯৫৪ সালে ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল থেকে মেট্রিক এবং ১৯৫৬ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাস করেন।
এরপর জগন্নাথ কলেজ থেকে বিএ পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখান থেকেই এমএ এবং এলএলবি পাস করেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন।
বহু আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়া এই নেতা ১৯৫২ সালে নবম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে গুরুতর আহতাবস্থায় গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন।
ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন তখনকার পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তিনবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে এদেশে অনেক প্রথিতযশা রাজনীতিক তৈরি করেছেন।
১৯৬৬ সালের ছয়দফা ও ১৯৬৯ সালের এগার দফার অন্যতম রূপকার শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন মহান মুক্তিযুদ্ধেরও অন্যতম সংগঠক। তিনি স্বাধীনতার স্বপক্ষে বিশ্বজনমত গঠনের জন্য ভারতীয় পার্লামেন্টে টানা আড়াই ঘণ্টা ভাষণ দেন।
১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রবীণ এই রাজনীতিক। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পার্লামেন্টে প্রথমবারের মতো চিফ হুইপ নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পর দ্বিতীয়বারের মতো চিফ হুইপ নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বরে উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে তিনি রংপুর-৬ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯২ সালে তাকে দল থেকে অপসারণ করা হয়। পরে বিএনপিতে যোগ দেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন।