তালিকাভুক্ত ৮ হাজার ২৩৮ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানের অর্ধেকই এখনও ঋণের এক টাকাও পরিশোধ করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। আর মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় পাওনা ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৫১ কোটি টাকাও আদায় করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় আইনমন্ত্রী বলেন, ঋণখেলাপিদের লাগাম টেনে ধরতে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।
সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক থেকে নিদিষ্ট শর্তে নেয়া টাকা শোধ করেনি এমন খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। আর ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৮ হাজার ২৩৮টি। এর মধ্যে ৪ হাজার ১৯৮টি প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত এক টাকাও পরিশোধ করেনি। এমনটাই বলছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য।
ঋণ পরিশোধে উৎসাহী করতে, ঋণ পুনঃতফসিলসহ নানা সুবিধা দেয়ার পরও গত ৬ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা, বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির বলেন, প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা ঋণখেলাপি। এসব প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪ হাজার ১৯৮টি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থান না নেওয়া গেলে এটা মহামারি আকারে বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, ব্যাংক যদি ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিকভাবে যাচাই-বাচাই না করে থাকে তাহলে এ ধরনের ভোগান্তি হতেই থাকবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, দেশের ১১টি অর্থঋণ আদালতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ৬৫ হাজার ৪৩৭টি মামলা। কিন্তু মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় আদায় করা যাচ্ছে না পাওনা ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতিতে মামলা নিষ্পত্তিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন আইনমন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, মামলার যে স্লথ গতি সেটাকে আরও গতিশীল করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমাদের অর্থনীতিতে ঋণখেলাপির বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।
২০০৩ সালে অর্থঋণ আদালত চালুর পর থেকে নিষ্পত্তি হওয়া মামলায়, খেলাপিদের বিরুদ্ধে ৫১ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা আদায়ের রায় পায় ব্যাংকগুলো। তবে মাত্র ১৮ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হয়েছে।