ফাইল ছবি।
দেশের জুয়েলারি শিল্পে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, শৃঙ্খলা আনা, ব্যবসার মানোন্নয়ন এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সতর্ক করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ সেপ্টেম্বর সারা দেশে বাজুস সদস্যদের মাঝে ‘স্বর্ণ ক্রয় সতর্কীকরণ নোটিশ’ জারি করেছে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্ট। সব প্রকার সোনা ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতা ও বিক্রেতাকে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য সংশ্লিষ্টদের বিনীত অনুরোধ জানিয়েছে বাজুস।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক খান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সারা দেশে জুয়েলার্সদের দেয়া সতর্কীকরণ নোটিশে বলা হয়েছে, বাজুস সদস্যরা প্রয়োজনের তাগিদে দেশি-বিদেশি বা পুরাতন-নতুন স্বর্ণালঙ্কার কিনে থাকেন। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে নানাবিধ আইনি জটিলতার সম্মুখীন হন তারা। একাধিকবার সতর্ক করা সত্ত্বেও কোনও কোনও ব্যবসায়ী পুরাতন বা ব্যাগেজ রুলের স্বর্ণ কিনে নানারকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
এ ধরনের সমস্যা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে উল্লেখিত নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে পুরাতন স্বর্ণ বা ব্যাগেজ রুলের স্বর্ণ কিনতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে বাজুস। নির্দেশনাগুলো হলো:
পুরাতন স্বর্ণ কেনায় যে সব সতর্কতা অবলম্বন করবেন ব্যবসায়ীরা:
১. বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি থেকে নিজ দায়িত্বে উভয় পাশের ফটোকপি রাখতে হবে।
২. বিক্রেতার বিক্রয়কৃত স্বর্ণালঙ্কারের উৎস সম্পর্কে জানতে হবে।
৩. বিক্রেতার স্বর্ণালঙ্কারের ক্রয় রশিদের কপি থাকতে হবে।
৪. মূল মালিক ব্যতিত কোনও প্রতিনিধির কাছ থেকে অলঙ্কার ক্রয় করা যাবে না।
ব্যাগেজ রুলের আওতায় আনা স্বর্ণ কেনার ক্ষেত্রে যে সব সতর্কতা অবলম্বন করবেন ব্যবসায়ীরা:
১. বিক্রেতার পাসপোর্টের মূল কপি থেকে নিজ দায়িত্বে ফটোকপি করে রাখতে হবে।
২. বিক্রেতা যে দেশ থেকে স্বর্ণ নিয়ে এসেছেন, সেই দেশের ভিসার কপি এবং এক্সিট ও এন্ট্রি সিলের কপি রাখতে হবে (মূল কপি থেকে নিজ দায়িত্বে ফটোকপি করে রাখতে হবে, এক্ষেত্রে বিক্রেতার কাছ থেকে উল্লেখিত ডকুমেন্টের কোনও ফটোকপি গ্রহণ করা যাবে না)।
৩. বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি থেকে নিজ দায়িত্বে উভয় পাশের ফটোকপি রাখতে হবে।
৪. প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে স্বর্ণ কিনতে হবে।
৫. এয়ারপোর্টে ডিক্লারেশন বা ট্যাক্সের আওতায় থাকলে ট্যাক্স প্রদানের ডকুমেন্ট (মূল কপি সংরক্ষণ করতে হবে)।
৬. প্রয়োজনে বিক্রেতার পরিচয় যাচাই-বাছাই করতে হবে।
৭. পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ট্যাক্স স্লিপে (পিওর গোল্ড ক্রয়ের ক্ষেত্রে) একই নাম, ঠিকানা আছে কিনা, তা যাচাই করে নিতে হবে।
একজন যাত্রী বিদেশ থেকে দেশে আসার সময় ব্যাগেজ রুলের আওতায় পণ্য আনার যে সুবিধা পায় তা তার ব্যক্তিগত বা পরিবারের সদস্যদের ব্যবহারের জন্য। তবে অর্থের প্রয়োজনে পণ্যটি বিক্রি করার ইচ্ছা পোষণ করলে উল্লেখিত তথ্য বা ডকুমেন্ট প্রাপ্তি সাপেক্ষ্যে কেনা যাবে।
সব ক্ষেত্রে ক্রয় রশিদ দিতে হবে এবং বিক্রেতার স্বাক্ষরযুক্ত ক্রয় রশিদের কপি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে তিন বছর সংরক্ষণ করতে হবে।
বিক্রেতা যদি বর্ণিত তথ্য দিতে না পারেন, তাহলে বুঝতে হবে সেটা অবৈধ স্বর্ণ। তাই এ ধরনের বিক্রেতার কাছ থেকে স্বর্ণ কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। বার বার সতর্ক করার পরও কোনও জুয়েলারি ব্যবসায়ী যদি অবৈধ স্বর্ণ কিনে আইনি ঝামেলার সম্মুখীন হন, তাহলে বাজুস তাকে কোনও সহযোগিতা করবে না।